দেশজুড়ে উধাও ৮৪ হাজার স্কুল! মিড-ডে মিলের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য, সবথেকে খারাপ দশা বিজেপি শাসিত রাজ্যে!

দেশে সরকারি স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন খাড়া করল কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট। রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী পোষণ শক্তি নির্মাণ (আগের মিড-ডে মিল) প্রকল্পের আওতায় থাকা স্কুলের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমেছে। ২০২০-২১ সালে যেখানে ১১.১৯ লক্ষ স্কুলে এই সুবিধা মিলত, ২০২৪-২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০.৩৫ লক্ষে। অর্থাৎ, মাত্র পাঁচ বছরে দেশজুড়ে ৮৪,৪৫৩টি স্কুল প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, যার হার প্রায় ৭.৫ শতাংশ।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, স্কুল বন্ধ হওয়ার এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। উত্তরপ্রদেশে গত পাঁচ বছরে ২৫,৩৬১টি স্কুল এই প্রকল্পের বাইরে চলে গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশে সেই সংখ্যা ২৪,৭০৪ এবং অসমে ৯,৩২১। পরিসংখ্যান বলছে, দেশজুড়ে যে পরিমাণ স্কুল এই প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, তার বড় অংশই (প্রায় ৭০ শতাংশ) এই তিনটি রাজ্যের। ইউডাইস প্লাস (UDISE+) তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র সরকারি স্কুল নয়, ব্যাপক হারে কমেছে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের সংখ্যাও।

শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ওপরই শিশুদের পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের মূল দায়িত্ব বর্তায়। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৮.৫ কোটি শিক্ষার্থীকে গরম রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে খাবারের খরচ মাথাপিছু সামান্য বাড়ানো হলেও, প্রকল্পের বরাদ্দে বড় অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ১২,৪৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও পরে তা কমিয়ে ১০,০০০ কোটি টাকা করা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্র ৫,৪২১ কোটি টাকা।

কেন এত বিপুল সংখ্যক স্কুল বন্ধ হলো বা প্রকল্পের আওতা থেকে বাদ পড়ল, তার নির্দিষ্ট কোনো কারণ কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট করা হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, সরকারি স্কুলের বেহাল দশা এবং গ্রামীন এলাকায় স্কুল সংযুক্তিকরণ বা বন্ধ হয়ে যাওয়াই এই বিপুল ঘাটতির প্রধান কারণ। কয়েক কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ যেখানে এই একবেলা খাবারের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে স্কুলের সংখ্যা কমে যাওয়া শিশুদের পুষ্টি ও শিক্ষার হারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।