সরস্বতীর রোষ থেকে শ্রীহরির আশ্রয়— তুলসী দেবীর এই অলৌকিক ইতিহাস আপনার ভাগ্য বদলে দেবে!

সনাতন ধর্মে তুলসী গাছকে কেবল একটি উদ্ভিদ নয়, বরং সাক্ষাৎ দেবীর রূপ হিসেবে পূজা করা হয়। শ্রীবিষ্ণুর অত্যন্ত প্রিয় তুলসীকে নিয়ে পুরাণে রয়েছে এক অপূর্ব কাহিনী। যখন ভগবান বিষ্ণু তুলসীকে আপন করে নিলেন, তখন তিনি লক্ষ্মীদেবীর সাথে আনন্দসহকারে বাস করতে শুরু করেন। শ্রীহরি তুলসীকে সৌভাগ্য ও গৌরবে মা লক্ষ্মীর সমান মর্যাদা প্রদান করেছিলেন। লক্ষ্মীদেবী এই ভাগ্য মেনে নিলেও, দেবী সরস্বতী তা সহ্য করতে পারেননি।
অপমানে অন্তর্ধানে তুলসী ও শ্রীহরির স্তুতি: কথিত আছে, সরস্বতীর রোষ ও অপমানে ব্যথিত হয়ে তুলসী দেবী অন্তর্ধানে চলে যান। প্রিয়তমাকে খুঁজে না পেয়ে ব্যকুল শ্রীবিষ্ণু স্বয়ং তুলসীবনে গিয়ে তাঁর স্তুতি শুরু করেন। তিনি ঘৃতপ্রদীপ জ্বালিয়ে ধূপ, সিন্দুর, চন্দন ও পুষ্প দিয়ে তুলসী দেবীর আরাধনা করেন। বিষ্ণুদেব তুলসী দেবীর বীজমন্ত্র পাঠ করে তাঁকে প্রসন্ন করেন এবং ঘোষণা করেন, যারা এই বীজমন্ত্র ভক্তিভরে পাঠ করবে, তারা সমস্ত সিদ্ধি লাভ করবে।
বরদান ও সর্বপূজ্য মর্যাদা: বিষ্ণুর ভক্তিতে তুষ্ট হয়ে তুলসী দেবী বৃক্ষরূপ ত্যাগ করে প্রকট হন এবং শ্রীহরির চরণকমলে আশ্রয় নেন। তখন ভগবান তাঁকে বর দেন— “হে দেবী! তুমি আজ থেকে সর্বপূজ্য হবে। আমি স্বয়ং তোমাকে আমার মস্তক ও বক্ষে ধারণ করব। দেবতারাও তোমাকে শিরোধার্য করবেন।” এরপর শ্রীহরি তাঁকে নিয়ে নিজ ধামে ফিরে যান।
তুলসী পূজার অসীম পুণ্য: ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, তুলসী দেবীর পূজা করলে মানুষ সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পায়। শ্রীবিষ্ণুর পূজা তুলসী ছাড়া অসম্পূর্ণ; তিনি তুলসীহীন ভোগ গ্রহণ করেন না। বিশেষ করে কার্তিক মাসে শ্রীহরিকে তুলসী পত্র অর্পণ করলে দশ হাজার গোদানের সমান ফল লাভ হয়। এমনকি তুলসীর মালা পরিধান করলেও ভক্তের পরম কল্যাণ সাধিত হয়।