কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি থাকলেও বলিউড সুন্দরী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের প্রতি তাঁর ‘পাগলামি ভরা’ প্রেম প্রকাশে বিন্দুমাত্র দমে যাননি ২০০ কোটির আর্থিক তছরুপের মূল অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখর। বড়দিন বা ক্রিসমাস উপলক্ষে আবারও জেল থেকে জ্যাকলিনকে এক দীর্ঘ আবেগঘন চিঠি পাঠালেন সুকেশ। তবে এবারের চিঠিতে যে উপহারের ঘোষণা তিনি করেছেন, তা শুনে রীতিমতো হতবাক হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তদন্তকারী আধিকারিকরাও।

আমেরিকায় জ্যাকলিনের জন্য রাজপ্রাসাদ সুকেশ তাঁর প্রিয় ‘বেবি’র জন্য এবার উপহার হিসেবে বেছে নিয়েছেন সুদূর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে এক বিশাল ম্যানশন বা রাজপ্রাসাদ। এই বিলাসবহুল আস্তানাটির নাম তিনি রেখেছেন ‘লাভ নেস্ট’। চিঠিতে সুকেশ অত্যন্ত রোমান্টিক ভঙ্গিতে লিখেছেন, “মেরি ক্রিসমাস বেবি। এই উৎসব আমাকে সবসময় তোমার সঙ্গে কাটানো বিশেষ মুহূর্তগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। তোমার প্রতি আমার যে পাগলামি ভরা ভালোবাসা, তা সত্যিই অক্ষয় এবং স্মরণীয়।”

ট্রাম্পের বাড়ির সঙ্গে তুলনা সুকেশের দাবি অনুযায়ী, এই ‘লাভ নেস্ট’-এর চারপাশে রয়েছে একটি বিশাল নিজস্ব ‘১৯ হোল’-এর গল্ফ কোর্স। নিজের এই নতুন সম্পত্তি নিয়ে দম্ভোক্তি করতেও ছাড়েননি তিনি। চিঠিতে তিনি রসিকতা করে লিখেছেন, “বেবি, গোটা আমেরিকায় এই বাড়িটি অনন্য। আমি নিশ্চিত যে আমাদের এই ‘লাভ নেস্ট’ দেখলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বিখ্যাত বাড়ি ‘মার-এ-লাগো’-ও হিংসে করবে।” তিনি আরও জানান, জ্যাকলিনের সেই মিষ্টি ‘বানি স্মাইল’ আজ দেখতে পাচ্ছেন না বলেই তাঁর মন ভারাক্রান্ত, আর তাই এই বিশেষ উপহার।

বিরক্ত জ্যাকলিন, নাছোড়বান্দা সুকেশ হোলি, ইস্টার কিংবা জন্মদিন— উপলক্ষ যাই হোক না কেন, তিহার জেল থেকে নিয়মিত জ্যাকলিনকে প্রেমপত্র পাঠিয়ে চলেছেন সুকেশ। যদিও জ্যাকলিন এই বিষয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নন। এর আগে অভিনেত্রী দিল্লির আদালতের দ্বারস্থ হয়ে এই ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত চিঠিপত্র এবং হয়রানির বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন। আদালতের কাছে তিনি আবেদন করেছিলেন যাতে সুকেশকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা থেকে বিরত রাখা হয়। কিন্তু আইনি বাধা বা জেলবন্দি দশা, কোনো কিছুই যে সুকেশের ‘একতরফা প্রেমে’ বাধা হতে পারছে না, বড়দিনের এই চিঠি তার প্রমাণ।

তদন্তের জালে অভিনেত্রী উল্লেখ্য, ২০০ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের মামলায় সুকেশ চন্দ্রশেখরের পাশাপাশি জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকেও সহ-অভিযুক্ত হিসেবে নাম দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, সুকেশের অপরাধের কথা জেনেও তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকার হিরের গয়না, ডিজাইনার পোশাক এবং বিলাসবহুল গাড়ি উপহার হিসেবে নিয়েছেন অভিনেত্রী। যদিও জ্যাকলিন বরাবরই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন যে, সুকেশের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা ছিল না এবং তিনিও পরিস্থিতির শিকার। তবে বড়দিনের এই নতুন ‘গিফট’ বিতর্ক যে জ্যাকলিনের অস্বস্তি আরও বাড়াল, তা বলাই বাহুল্য।