তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পদধ্বনি? তাইওয়ান থেকে ফিলিপাইন—চীনের আগ্রাসী কৌশলে কাঁপছে বিশ্ব!

চীনের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের ২০২৫ সালের সর্বশেষ রিপোর্টে চীনের এক ভয়ঙ্কর দ্বৈত কৌশল ফাঁস হয়েছে। একদিকে বেইজিং ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর নাটক করছে, অন্যদিকে তলে তলে আঞ্চলিক দাবি জোরদার করে চলেছে। তবে এই রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনের লক্ষ্য কেবল ভারতের অরুণাচল প্রদেশেই সীমাবদ্ধ নয়।
অরুণাচল থেকে রাশিয়া: ড্রাগনের সর্বগ্রাসী নজর ভারত ও চীনের মধ্যে ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। চীন অরুণাচল প্রদেশকে ‘দক্ষিণ তিব্বত’ হিসেবে দাবি করে, যদিও তা ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, চীন এখন তার ‘পরম বন্ধু’ রাশিয়ার ভূখণ্ডের দিকেও নজর দিয়েছে। ২০২৩ সালে চীনের সরকারি মানচিত্রে রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক শহরসহ বেশ কিছু এলাকাকে চীনা নামে দেখানো হয়েছে। উসুরি ও আমুর নদীর মধ্যবর্তী বিতর্কিত দ্বীপটিকেও চীন নিজেদের বলে দাবি করছে, যা ২০০৮ সালের সীমান্ত চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন।
সাইবেরিয়া কি চীনের পরবর্তী লক্ষ্য? বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় রাশিয়ার সাইবেরীয় অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। ‘নিউজউইক’-এর দাবি অনুযায়ী, চীন রাশিয়ার সীমান্তের কাছে প্রচুর কৃষিজমি লিজ নিচ্ছে বা কিনে নিচ্ছে। ১৫০ বছর আগের কিং রাজবংশের ইতিহাসকে হাতিয়ার করে চীন দাবি করছে যে, ১৯ শতকে রাশিয়ার হাতে যাওয়া এই জমিগুলো আসলে তাদের।
দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান সংকট কেবল স্থলভাগ নয়, সমুদ্রেও চীন বেপরোয়া। ফিলিপাইনের ‘পাগ-আসা’ দ্বীপ নিয়ে সংঘর্ষ এবং দক্ষিণ চীন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সামরিক কাঠামো গড়ে তোলা বেইজিংয়ের আগ্রাসনের প্রমাণ। পেন্টাগনের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, তাইওয়ানকে জোরপূর্বক দখলে নিতে চীন বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বা নৌ-অবরোধের পরিকল্পনা করছে। ২০২৪ সালের সামরিক মহড়াগুলোতে চীন স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা ১,৫০০ থেকে ২,০০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
পেন্টাগনের এই রিপোর্ট স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, এশিয়ার মানচিত্র বদলে দিতে চীন এখন মরিয়া।