সাবধান! আপনার কেনা প্যারাসিটামল কি বিষ? ২০৫টি ওষুধের গুণমান নিয়ে বিস্ফোরক রিপোর্ট

মাথাব্যথা বা জ্বর হলেই আলমারি থেকে প্যারাসিটামল বের করে খেয়ে নেওয়া কিংবা গ্যাসের সমস্যায় প্যান ডি-তে ভরসা রাখা আমাদের অনেকেরই অভ্যাস। কিন্তু আপনি কি জানেন, যে ওষুধ আপনাকে সুস্থ করার কথা, তাই আপনার শরীরে মরণফাঁদ পাতছে? ড্রাগ কন্ট্রোলের সাম্প্রতিক পরীক্ষায় প্যারাসিটামল ও প্যান ডি-সহ একাধিক জনপ্রিয় ওষুধ গুণমানের পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছে। আপনার অজান্তেই প্রতিদিন আপনার শরীরে প্রবেশ করছে নিম্নমানের বা নকল ওষুধ।
সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO)-এর মাসিক গুণমান পরীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। নভেম্বর মাসের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০৫টি ওষুধের নমুনা নির্দিষ্ট মানদণ্ড বা স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪টি ওষুধকে সরাসরি ‘নিম্নমানের’ বলে চিহ্নিত করেছে সেন্ট্রাল ড্রাগস ল্যাবরেটরি। এছাড়া আরও ১৪১টি ওষুধের নমুনা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্যটি এসেছে চণ্ডীগড়ের রিজিওনাল ড্রাগস টেস্টিং ল্যাবরেটরি থেকে। গাজিয়াবাদ থেকে সংগৃহীত ওষুধের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, বাজারে বহুল বিক্রিত ‘প্যান ৪০’ (প্যান্টোপ্রাজোল) এবং ‘টেলমা ৪০’-এর মতো জীবনদায়ী ওষুধগুলো আসলে নকল! ড্রাগ কন্ট্রোলের তথ্য অনুযায়ী, আসল ওষুধের মোড়ক হুবহু নকল করে জাল ব্যাচ নম্বর দিয়ে এই ওষুধগুলো বাজারে ছাড়া হচ্ছিল। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, এই নকল ওষুধগুলো তাদের কারখানায় তৈরি হয়নি।
এর আগেও প্যারাসিটামল-সহ ৫৩টি ওষুধ গুণমানের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিল। চিকিৎসকদের মতে, এই ধরণের নিম্নমানের বা নকল ওষুধ সেবনের ফলে কিডনি, লিভার এবং হার্টের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। সাধারণ রোগ সারার বদলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। বর্তমানে এই বিশাল জালিয়াত চক্রের উৎস খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। ঘরোয়া টোটকা বা হাতুড়ে দাওয়াইয়ের মতো ওষুধ খাওয়ার আগে এখন থেকে ১০ বার ভাবুন, আপনি কি বিষ কিনছেন না তো?