জিএসটি-তে ২ লক্ষ কোটির জালিয়াতি! কেন্দ্রের ‘প্রচারসর্বস্ব’ নীতি নিয়ে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা!

পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি (GST) নিয়ে মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানালেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা ড. অমিত মিত্র। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এক দীর্ঘ বিবৃতিতে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, কেন একসময় তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিএসটি-র পক্ষে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং বর্তমানে সেই ব্যবস্থা কীভাবে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (MSME) জন্য মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অমিত মিত্র জানান, ২০০৯ সালে যখন তিনি তৃণমূল নেত্রীকে জিএসটি সমর্থনের কথা বলেছিলেন, তখন প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। তৎকালীন ‘ভ্যাট’ জমানায় ব্যবসায়ীদের ১৭টি ভিন্ন ভিন্ন করের বোঝা বইতে হতো। তিনি ভেবেছিলেন, একটি স্বচ্ছ ও ডিজিটাল কর ব্যবস্থা ক্ষুদ্র শিল্পকে সেই অক্টোপাসের জাল থেকে মুক্তি দেবে। সাধারণ মানুষের প্রতি মমতার সহানুভূতির জায়গা থেকেই তিনি ক্ষুদ্র শিল্পের স্বার্থে জিএসটি-তে সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৭ সালে কেন্দ্র যে অসম্পূর্ণ পরিকাঠামো নিয়ে জিএসটি চালু করে, তার সঙ্গে আদি ভাবনার কোনো মিল ছিল না।

কেন্দ্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “শুধুমাত্র শিরোনামে আসার নেশায় মত্ত কেন্দ্রীয় সরকার বিন্দুমাত্র প্রস্তুতি ছাড়াই জিএসটি চালু করেছিল। তখন মাসে ৩০০ কোটি ইনভয়েস প্রসেস করার ক্ষমতাই ছিল না জিএসটিএন-এর।” পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, জিএসটি চালুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৯৫৫টি বিজ্ঞপ্তি এবং ৭৫৪টি সার্কুলার জারি হয়েছে। ৮৬ বার আইন সংশোধন এবং ১৪৭ বার নিয়ম বদল করা হয়েছে। ১৯২ রকমের ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

এই প্রশাসনিক জটিলতার ফলে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার জালিয়াতি হয়েছে বলেও দাবি করেছেন ড. মিত্র। তাঁর মতে, কেন্দ্রের অদক্ষতার কারণে পুরনো সেই করের ‘অক্টোপাস’ আজ নতুন চেহারায় ফিরে এসে ক্ষুদ্র শিল্পের টুঁটি চেপে ধরছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে জিএসটি নিয়ে অমিত মিত্রের এই আক্রমণ কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতকে নতুন মাত্রা দিল।