অপমানের প্রতিবাদ করায় কেড়ে নেওয়া হলো মঞ্চ? লগ্নজিতা বিতর্কে মুখ খুলে চরম খেসারত দিলেন পল্লব কীর্তনীয়া!

সঙ্গীতশিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তীর হেনস্থার প্রতিবাদ করায় এবার খেসারত দিতে হলো জনপ্রিয় গায়ক পল্লব কীর্তনীয়াকে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে লগ্নজিতার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সরব হয়েছিলেন পল্লব। কিন্তু সেই প্রতিবাদের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার তাঁর নিজের অনুষ্ঠানই বাতিল হয়ে গেল পূর্ব বর্ধমানের ভাতার বইমেলায়। গায়কের দাবি, ‘শাসকের প্রবল চাপে’ শেষ মুহূর্তে তাঁর অনুষ্ঠানটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন উদ্যোক্তারা।

ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে, যখন ভগবানপুরের একটি মঞ্চে ‘জাগো মা’ গানটি গাওয়ার জন্য লগ্নজিতাকে জনৈক মেহেবুব মল্লিক হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। একজন শিল্পীর স্বাধীনতার ওপর এই আঘাতের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন পল্লব কীর্তনীয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছিলেন, লগ্নজিতার পাশে থাকা তাঁর নৈতিক কর্তব্য। কিন্তু এই সংহতিই যেন তাঁর জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। ২৫ ডিসেম্বর ভাতার বইমেলায় তাঁর গান গাওয়ার কথা থাকলেও আচমকাই তা বাতিল করে দেওয়া হয়।

পল্লব ক্ষোভের সঙ্গে জানান, গত ১০ বছরে এমন ঘটনা তাঁর সঙ্গে বারবার ঘটেছে। রবীন্দ্র সদনের মতো মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চেও তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, লগ্নজিতার পাশে দাঁড়ানো এবং এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হলো তাঁকে।

অন্যদিকে, বিতর্ক ধামাচাপা দিতে ময়দানে নেমেছে মেলা কমিটিও। মঙ্গলবার একটি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বইমেলা ও উৎসব কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মধুসূদন বাবু দাবি করেন, কোনো রাজনৈতিক চাপ নয়, বরং ‘আর্থিক সমস্যা’র কারণেই শেষ মুহূর্তে পল্লব কীর্তনীয়াকে আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে মেলা কমিটির এই সাফাই মানতে নারাজ শিল্পী অনুরাগী ও সচেতন মহল। লগ্নজিতা ও পল্লবের এই জোড়া বিতর্ক ফের একবার প্রশ্ন তুলে দিল—এ রাজ্যে শিল্পীর বাকস্বাধীনতা ও সম্মান কি আজ রাজনীতির হাতের পুতুল?