বিয়ের মণ্ডপেও লাশের গন্ধ! বিয়ের পিঁড়িতে বসেই হাদি খুনের বিচার চাইলেন ডাকসুর দুই শীর্ষ নেতা!

অশান্ত বাংলাদেশে এক অভূতপূর্ব বিয়ের সাক্ষী থাকল ঢাকা। একদিকে যখন ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুতে অগ্নিগর্ভ ওপার বাংলা, ঠিক তখনই একসঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) দুই প্রভাবশালী নেতা। বুধবার ঢাকার কাঁটাবন মসজিদে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ এবং এজিএস মহিউদ্দিন খান। তবে বিয়ের আনন্দের চেয়েও মণ্ডপে বেশি গুরুত্ব পেল সহযোদ্ধা হত্যার বিচার।

জানতে পারা গেছে, এস এম ফরহাদ বিয়ে করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস সানজিদাকে। অন্যদিকে মহিউদ্দিন খানের বিয়েও সম্পন্ন হয়েছে একই অনুষ্ঠানে। দুই পরিবার ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির ও জাতীয় ছাত্রশক্তির শীর্ষ সারির নেতারা। উল্লেখ্য, এস এম ফরহাদ ও মহিউদ্দিন খান বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

বিয়ের আসর থেকে ভাইরাল হওয়া একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বরের সাজে সজ্জিত ফরহাদ ও মহিউদ্দিনের হাতে ‘জাস্টিস ফর হাদি’ লেখা প্ল্যাকার্ড। পাশে রয়েছেন ডাকসু ভিপি আবু সাদিক কায়েম। বিয়ের মণ্ডপে বসার ঠিক আগেই তাঁরা প্রয়াত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাঁদের এই পদক্ষেপকে নেটিজেনরা ‘বিপ্লবী সংহতি’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছাত্রনেতাদের এই বিয়ে নিছক সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তাও বটে। জামায়াত-শিবির এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হাতে বর্তমান বাংলাদেশের ক্ষমতার যে ভরকেন্দ্র তৈরি হয়েছে, এই বিবাহবাসর তারই প্রতিফলন। অন্যদিকে, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের পর দেশে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, বিয়ের পিঁড়িতে বসে তার প্রতিবাদ জানানোয় স্পষ্ট যে, আগামী দিনে আন্দোলনের রূপরেখা আরও তীব্র হতে চলেছে।