কর্পোরেট দাক্ষিণ্যে ফুলেফেঁপে উঠছে পদ্ম শিবির! বন্ড উঠে গেলেও কীভাবে এল এত টাকা? উত্তাল রাজনীতি

নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলির তহবিল সংগ্রহের যে প্রথম বার্ষিক রিপোর্ট সামনে এসেছে, তা দেখে চক্ষু চড়কগাছ রাজনৈতিক মহলের। নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে শাসক দল বিজেপির সংগৃহীত অনুদানের পরিমাণ বিরোধীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছে। এক বছরে বিজেপির তহবিলে জমা পড়েছে ৬,০৮৮ কোটি টাকা, যেখানে দেশের প্রাচীনতম দল কংগ্রেস সংগ্রহ করতে পেরেছে মাত্র ৫২২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আয়ের অঙ্কে কংগ্রেসের তুলনায় প্রায় ১২ গুণ শক্তিশালী বিজেপি।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, নির্বাচনী বন্ড উঠে যাওয়ার পর ধারণা করা হয়েছিল রাজনৈতিক অনুদানে ভাটা পড়বে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বিজেপির আয় গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্ড ব্যবস্থা না থাকলেও কর্পোরেট দুনিয়া যে দু-হাত ভরে শাসক দলকেই সাহায্য করছে, এই পরিসংখ্যান তারই প্রমাণ। অন্যদিকে, কংগ্রেস ৫২২ কোটি টাকাকে ‘স্বচ্ছতার জয়’ হিসেবে দাবি করলেও, আর্থিক এই বিপুল বৈষম্য আগামী দিনে নির্বাচনী লড়াইয়ে তাদের বড়সড় প্রতিকূলতার মুখে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই বিপুল তহবিলের উৎস নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। তাদের অভিযোগ, বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলি ‘সুবিধা’ পাওয়ার আশায় শাসক দলকে এই বিপুল অর্থ দিচ্ছে। পাল্টা যুক্তিতে বিজেপি জানিয়েছে, এই অনুদান আসলে মোদী সরকারের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের নীতির প্রতি দেশবাসীর আস্থার প্রতিফলন। তবে ভোট কৌশলী ও বিশ্লেষকদের মতে, তহবিলের এই বিশাল ফারাক প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এবং বুথ স্তরের সংগঠন মজবুত করার ক্ষেত্রে বিজেপিকে একপেশে সুবিধা দেবে, যা গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের ভারসাম্য নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলে দিল।