“বাঘের ডেরায় একাধিক গ্রাম!”-যে কারণে রয়্যাল বেঙ্গল আনতেই পারছে না বাংলা

উত্তরবঙ্গের বক্সা টাইগার রিজার্ভে (Buxa Tiger Reserve) বাঘ ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন কি তবে অধরাই থেকে যাবে? অসম থেকে বাঘ নিয়ে আসার প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে চরম জটিলতা। সমস্যা বাঘ নিয়ে নয়, বরং বাঘের জন্য চিহ্নিত ডেরায় মানুষের বসবাস নিয়েই তৈরি হয়েছে মূল বাধা।
মানুষের ভিড়ে ঠাঁই নেই বাঘের!
রাজ্য সরকার অসমের কাজিরাঙা ও মানস থেকে বাঘ এনে বক্সায় ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু ন্যাশনাল টাইগার কনজার্ভেশন অথরিটি (NTCA)-র গাইডলাইন অনুযায়ী, বাঘের ‘কোর এরিয়া’ বা মূল বিচরণ ক্ষেত্রে কোনও মানুষের বসতি থাকা চলবে না। বর্তমানে বক্সার গভীর জঙ্গলে এখনও একাধিক গ্রাম রয়ে গিয়েছে, যা বাঘ আনার পথে প্রধান অন্তরায়।
পুনর্বাসনের চিত্র:
-
ভুটিয়া বস্তি: এই বস্তিকে সরিয়ে কালচিনির ভাটপাড়া চা বাগানের ‘বনছায়ায়’ পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে।
-
গাঙ্গুটিয়া বস্তি: এই জনবসতিকেও সরানো সম্ভব হয়েছে।
-
জয়ন্তী গ্রাম: এই গ্রামের একটি বড় অংশ সরানো নিয়ে এখনও দড়ি টানাটানি চলছে।
কেন সুন্দরবন থেকে বাঘ আনা হচ্ছে না?
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ঘরের কাছে সুন্দরবন থাকতে কেন অসমের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে? বনদপ্তরের স্পষ্ট উত্তর— সুন্দরবনের নোনা জল আর ম্যানগ্রোভের বাস্তুতন্ত্রের বাঘেরা ডুয়ার্সের পাহাড়ি ও ঘন জঙ্গলে মানিয়ে নিতে পারবে না। তাই কাজিরাঙার মতো একই রকম ভৌগোলিক পরিবেশের জঙ্গল থেকেই ১২টি বাঘ আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বক্সার বাঘ-সামর্থ্য একনজরে:
-
ধারণক্ষমতা: ক্যামেরা ট্র্যাপ ও পায়ের ছাপ বিশ্লেষণ (PIS-MNB পদ্ধতি) অনুযায়ী বক্সায় ১০৫টি বাঘ থাকতে পারে।
-
বর্তমান পরিস্থিতি: ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষবার ক্যামেরায় বাঘের দেখা মিলেছিল। তবে সেই বাঘটি বক্সার স্থায়ী বাসিন্দা কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
-
বনদপ্তরের সিদ্ধান্ত: যতক্ষণ না জঙ্গল থেকে জনবসতি সম্পূর্ণ সরানো যাচ্ছে এবং নিরাপত্তা ১০০ শতাংশ সুনিশ্চিত হচ্ছে, ততক্ষণ অসম থেকে বাঘ আনা সম্ভব নয়।