প্রধানমন্ত্রীর সভায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগ TMC-র, মোদী মনে করালেন ‘মেসিকাণ্ড’

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সশরীরে পৌঁছাতে পারেননি, কিন্তু বঙ্গবাসীকে দেওয়া কথা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আকাশপথে পৌঁছাতে না পেরে ফোনে দেওয়া সংক্ষিপ্ত কিন্তু ঝাঁঝালো ভাষণে সরগরম করে দিলেন রাজ্য রাজনীতি। পরে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ তাঁর না বলা কথাগুলি পোস্ট করে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি।

নারীর সম্মান ও যুবভারতী বিতর্ক: এদিন ভাষণের শুরুতেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের ফুটবলপ্রেমী মানুষ আজ বারবার লজ্জার মুখে পড়ছে শুধু তৃণমূলের ব্যর্থতার কারণে। রাজ্যের মানুষ গত কয়েক বছরে যে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন, বিশেষ করে নারী নিরাপত্তা ও মর্যাদার অভাব আজ চরম উদ্বেগের বিষয়।” যুবভারতীর ঘটনায় তরুণ ফুটবলপ্রেমীদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বলেও আক্ষেপ করেন তিনি।

অনুপ্রবেশ ও ‘মহাজঙ্গলরাজ’ প্রসঙ্গ: তৃণমূলকে ‘অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে অভিহিত করে মোদী বলেন, “বিদেশের অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে তৃণমূল সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। আর এই অনুপ্রবেশকারীরাই গরিব মানুষের ক্ষতি করছে, সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে এবং বাংলার নারীশক্তির ওপর নৃশংস অত্যাচার চালাচ্ছে।” বিহারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি হুঙ্কার দেন, বাংলার মানুষ এবার এই ‘মহাজঙ্গলরাজ’ থেকে মুক্তি চায়।

বিকাশ বনাম কাটমানি: রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, বিজেপি সরকার ৫২ লক্ষ বাড়ি অনুমোদন করেছে এবং ১ কোটির বেশি পরিবারকে ‘জল জীবন মিশন’-এর মাধ্যমে পরিশ্রুত পানীয় জল দিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের অসহযোগিতার কারণে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ থমকে রয়েছে। তাঁর কথায়, “বিজেপি বিশ্বাস করে সুশাসন ও গতিতে, আর তৃণমূল ব্যস্ত কাটমানি আর কমিশনের রাজনীতিতে।”

মতুয়া ও নমশূদ্র সম্প্রদায়ের জন্য বার্তা: নদীয়াকে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পবিত্র ভূমি হিসেবে উল্লেখ করে মোদী মতুয়া সমাজের ঐতিহ্যকে কুর্নিশ জানান। তিনি স্পষ্ট বলেন, “বিজেপি সবসময় মতুয়া ও নমশূদ্র ভাইবোনেদের পাশে আছে। সিএএ (CAA)-এর মাধ্যমে আপনাদের সসম্মানে বাঁচার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলায় বিজেপি সরকার এলে এই উন্নয়নের গতি আরও বাড়বে।”

আবহাওয়ার রাজনীতি ও ‘এক্স’ হ্যান্ডেলের পোস্ট: এদিন আবহাওয়া খারাপ থাকায় প্রধানমন্ত্রীর বিমান ল্যান্ড করতে পারেনি। ফোনে ১৫ মিনিটের বার্তা দিয়ে তিনি শান্ত হননি। সন্ধেবেলা তিনি জানান, তাঁর আরও অনেক কথা বলার ছিল যা সময়ের অভাবে সম্ভব হয়নি। এরপরই তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে বাকি দীর্ঘ বক্তব্য পোস্ট করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগের বাণ ছোঁড়েন তিনি।