“আমার দলের সভাপতিই তো মাঠ ছেড়ে পালানো লোক!” জিতন রাম মাঞ্জির বিষ্ফোরক মন্তব্যে তোলপাড় বিহারের রাজনীতি।

বিহারের রাজনীতিতে আবার শিরোনামে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চার (HAM) প্রধান তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতন রাম মাঞ্জি। সম্প্রতি একটি ভাইরাল ভিডিওতে প্রশাসনের সাহায্যে নির্বাচনে জেতার ইঙ্গিত দেওয়ার পর প্রবল বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন তিনি। এবার সেই বিতর্ক থেকে বাঁচতে সাফাই দিতে গিয়ে খোদ নিজের দলের রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধেই ‘পালিয়ে যাওয়া’র অভিযোগ তুললেন মাঞ্জি।

রাজ্য সভাপতিকে ‘পলাতক’ তকমা! শনিবার পাটনায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাঞ্জি বলেন, তাঁর বক্তব্যকে ভুলভাবে বিকৃত করা হয়েছে। তিনি মোটেও জেলা শাসকের সাহায্য নিয়ে জেতার কথা বলেননি। উল্টে তাঁর দাবি, ২০২০ সালের নির্বাচনে তাঁদের দলের রাজ্য সভাপতি অনিল কুমার ভোট গণনার সময় নিরুৎসাহিত হয়ে মাঠ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। মাঞ্জির কথায়:

“অনিল কুমার একজন পলাতক প্রার্থীর মতো আচরণ করেছিলেন। তিনি যদি শেষ পর্যন্ত থেকে পুনর্গণনার (Recounting) দাবি জানাতেন, তবে হয়তো তিনি জিতেই যেতেন। অনেক সময় ২৭-৩০ ভোটের ব্যবধানে হার-জিত বদলে যায়, যেটা ওঁর করা উচিত ছিল।”

ভাইরাল ভিডিও নিয়ে সাফাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে মাঞ্জিকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে, এক অফিসার তাঁকে জিততে সাহায্য করেছিলেন। এই নিয়ে মহাজোটের নেতারা তোপ দাগতেই মাঞ্জি স্পষ্ট করেন যে, তিনি কেবল পুনর্গণনার আইনি প্রক্রিয়ার কথা বলছিলেন। তাঁর মতে, ১৯৯০ সালে তিনিও একবার অল্প ভোটে হেরেছিলেন, কিন্তু তখন তিনি পুনর্গণনার দাবি জানাননি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এখন কর্মীদের মনোবল বাড়াতে তিনি এই কথা বলেছেন।

আধিকারিকদের নয়, দোষ কর্মীদেরই! কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সরাসরি জানান যে, নির্বাচন প্রক্রিয়ার কোনো অফিসারকে তিনি দোষ দিচ্ছেন না। বরং দোষ তাঁর নিজের কর্মীদের। মাঞ্জির দাবি, চাপের মুখে অনেক সময় প্রার্থীরা ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যান, যা অনুচিত। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

মাঞ্জির এই ‘সাফাই’ বিহারের রাজনৈতিক উত্তাপ কমানোর বদলে যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিরোধী শিবিরের দাবি, মাঞ্জি আসলে ঘুরিয়ে স্বীকার করে নিয়েছেন যে নির্বাচনে কোনো না কোনোভাবে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এখন নিজের দলের সভাপতির সাথে তাঁর এই সংঘাত কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই দেখার।