“মা-বাবা কোথায়?” মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারল না দাদা, পুলিশের জেরায় ফাঁস হল হাড়হিম করা খুনের রহস্য

উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে এক হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডের পর্দাফাঁস করল পুলিশ। নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিন পর জানা গেল, খোদ নিজের ছেলের হাতেই নৃশংসভাবে খুন হতে হয়েছে প্রাক্তন রেলকর্মী শ্যাম বাহাদুর (৬৫) এবং তাঁর স্ত্রী ববিতা (৬৩)-কে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে তাঁদের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না মেয়ে বন্দনা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নেমে পুলিশ বড় সাফল্য পেয়েছে।
কেন এই নৃশংসতা? পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে পারিবারিক অশান্তি এবং ধর্মীয় গোঁড়ামির এক মর্মান্তিক যোগসূত্র। অভিযুক্ত ছেলে অম্বেশ বাহাদুর পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। করোনার সময় তিনি কলকাতায় থাকার সময় তাঁর পরিবারের অমতে এক মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করেন। অম্বেশের পরিবার এই আন্তঃধর্মীয় বিবাহ মেনে নেয়নি। সম্পত্তি এবং বিবাহিত জীবন নিয়ে গত ৮ ডিসেম্বর মা-বাবার সঙ্গে চরম বিবাদে জড়িয়ে পড়েন অম্বেশ।
খুনের রোমহর্ষক বিবরণ: পুলিশ সূত্রে খবর, বচসা চলাকালীন অম্বেশ প্রথমে তাঁর মায়ের মাথায় লোহার রড (মতান্তরে শিলনোড়া) দিয়ে সপাটে আঘাত করেন। স্ত্রীকে বাঁচাতে এলে বাবা শ্যাম বাহাদুরকেও শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিনি। এরপরই শুরু হয় প্রমাণ লোপাটের ভয়ংকর খেলা:
দেহ খণ্ডবিখণ্ড: খুনের পর নিজের বাড়ির বেসমেন্টে রাখা করাত দিয়ে বাবা-মায়ের দেহকে তিন টুকরো করে কাটেন অম্বেশ।
সিমেন্টের বস্তায় দেহ: সেই দেহাংশগুলি ৬টি সিমেন্টের বস্তায় ভরে নিজের গাড়িতে তোলেন।
নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া: প্রমাণ সরাতে মাঝরাতে গোমতী ও সাই নদীতে সেই দেহাংশগুলি ভাসিয়ে দেন তিনি। এমনকি রক্তের দাগ মুছতে বাবা-মায়ের পুরোনো জামাকাপড় ব্যবহার করেন।
পুলিশি তৎপরতা: আদালতের নির্দেশে পুলিশ অম্বেশকে জেরা শুরু করলে তিনি বারবার বয়ান বদলাচ্ছিলেন। কিন্তু কড়া জেরার মুখে শেষমেশ নিজের অপরাধ স্বীকার করেন তিনি। জৌনপুরের প্রবীণ পুলিশ আধিকারিক আয়ুষ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, অভিযুক্তের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নদী থেকে ইতিমধ্যেই দেহাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। অম্বেশকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।