ভোররাতেই যমদূত হয়ে ঘরে ঢুকল গজরাজ! মাদারিহাটে হাতির তাণ্ডবে তছনছ সুশীল-বিষ্ণুদের বাড়ি, রণক্ষেত্র উত্তরবঙ্গ

কনকনে ঠান্ডার ভোরে যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন মাদারিহাট, ঠিক তখনই লোকালয়ে আছড়ে পড়ল যমদূত! জলদাপাড়ার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের দুই পৃথক গ্রামে হানা দিল দু’টি হাতি। গজরাজের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল সুশীল রায় ও বিষ্ণু ওঁরাওদের বসতবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রচুর গাছপালাও।
ভোরবেলা দুই গ্রামে জোড়া আক্রমণ: স্থানীয় সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটের মাস্টার পাড়া ও ছেঁকামারী— এই দুই গ্রামে এদিন পৃথকভাবে দুটি হাতি হানা দেয়।
মাস্টার পাড়া: পশ্চিম খয়েরবাড়ি গ্রামের মাস্টার পাড়ার বাসিন্দা সুশীল রায়ের বাড়িতে একটি হাতি অতর্কিতে হামলা চালায়। বাড়ির দেওয়াল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় গজরাজ।
ছেঁকামারী: অন্যদিকে, ছেঁকামারী গ্রামের বিষ্ণু ওঁরাওয়ের বাড়িতেও আর একটি হাতি ঢুকে পড়ে তাণ্ডব চালায়। প্রাণভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালান স্থানীয় বাসিন্দারা।
বন দপ্তরের তৎপরতা: খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন জলদাপাড়া বন বিভাগের কর্মীরা। গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর হাতি দু’টিকে পুনরায় বনাঞ্চলে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হন তাঁরা। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শীতকালে খাদ্যের সন্ধানেই অনেক সময় বন্য প্রাণীরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন আধিকারিকরা।
আতঙ্কে মাদারিহাট: উত্তরবঙ্গে হাতির হামলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। কখনও চা-বাগান, কখনও রেললাইন আবার কখনও বসতবাড়ি— গজরাজের আক্রমণে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে পাহাড় ও সমতলের মানুষ। মাদারিহাটের এই ঘটনায় আরও একবার বন্যপ্রাণী ও মানুষের সংঘাতের ছবি প্রকাশ্যে এল। এলাকায় বন দপ্তরের টহলদারি বাড়ানোর দাবি তুলেছেন আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা।