যৌন স্বাস্থ্যেও আইএমএফ-এর কোপ! পাকিস্তানে কনডমের ওপর ১৮% ট্যাক্স কমানোর প্রস্তাব নাকচ, বিপাকে শেহবাজ সরকার

একদিকে ঋণের পাহাড়, অন্যদিকে লাগামহীন জনসংখ্যা বৃদ্ধি—এই দুই সংকটের মাঝে পড়ে কার্যত দিশেহারা পাকিস্তান। দেশের জনবিস্ফোরণ রুখতে কনডম ও অন্যান্য গর্ভনিরোধক পণ্যের ওপর থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি (GST) প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছিল শেহবাজ শরিফের সরকার। কিন্তু সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ (IMF)।
কেন এই কঠোর অবস্থান আইএমএফ-এর? বর্তমানে আইএমএফ-এর বেইলআউট প্যাকেজের অধীনে রয়েছে পাকিস্তান। ঋণের শর্ত অনুযায়ী, কোনোভাবেই রাজস্ব আদায় কমানো যাবে না। আইএমএফ-এর যুক্তি:
কর কাঠামো দুর্বল হওয়া: কোনো নির্দিষ্ট পণ্যে ছাড় দিলে সামগ্রিক কর ব্যবস্থা দুর্বল হতে পারে।
পাচারের ঝুঁকি: কর ছাড় দিলে সীমান্ত দিয়ে এই পণ্য পাচারের সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
রাজস্ব ক্ষতি: এই ছাড় দিলে সরকারের প্রায় ৬০ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি রাজস্ব ক্ষতি হবে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে আইএমএফ হতে দিতে চায় না।
বিলাসবহুল পণ্যের তালিকায় স্যানিটারি প্যাড ও ডায়াপার! শুধুমাত্র কনডম নয়, মহিলাদের হাইজিন প্যাড এবং শিশুদের ডায়াপারের ওপর থেকেও কর কমানোর ঘোর বিরোধিতা করেছে আইএমএফ। এর ফলে এই জরুরি পণ্যগুলি সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং কার্যত ‘বিলাসবহুল’ পণ্যের তকমা পেয়ে যাচ্ছে।
সংকটে সাধারণ মানুষ: পাকিস্তানের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বর্তমানে প্রায় ২.৫৫ শতাংশ। প্রতি বছর প্রায় ৬০ লক্ষ নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছে সে দেশে। এমন পরিস্থিতিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সস্তা করা অত্যন্ত জরুরি ছিল। কিন্তু আইএমএফ-এর ঋণের কিস্তি (অপারেশন সিঁদুর ২.০-র গুঞ্জনের মাঝে যা পাওয়া গিয়েছে) নিশ্চিত করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের মৌলিক স্বাস্থ্যের অধিকারে কোপ বসাতে বাধ্য হচ্ছে সরকার।
ঋণ পেলেও আইএমএফ-এর শর্তের বেড়াজালে পাকিস্তানের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে গিয়ে সমাজ ও স্বাস্থ্যের চাকা কি তবে থমকে যাবে? এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।