“চাকরি নিক বা নরকে যাক!” নীতীশের হিজাব-কাণ্ডে গিরিরাজ সিংয়ের মন্তব্যে দাউদাউ আগুন, ফিনাইল দিয়ে মুখ ধোয়ার নিদান ইলতিজার

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের একটি ভিডিও ঘিরে শুরু হওয়া বিতর্ক এখন আর কেবল বিহারের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই, তা ছড়িয়ে পড়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। নিয়োগপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এক মহিলা আয়ুষ চিকিৎসকের হিজাব সরাতে গিয়ে নীতীশ কুমার যে কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা নিয়ে এখন তোলপাড় দেশ। একদিকে যখন আরজেডি-কংগ্রেস সরব, তখন এনডিএ শিবিরের নেতাদের মন্তব্য বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে।

ঘটনাটি কী? মঙ্গলবার ১,২০০ আয়ুষ চিকিৎসকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার সময় নীতীশ কুমার এক মুসলিম মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তাঁর মুখ থেকে হিজাব সরানোর চেষ্টা করেন। পাশে থাকা উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করলেও ততক্ষণে ক্যামেরা বন্দি হয়ে যায় সেই দৃশ্য।

গিরিরাজ সিংয়ের “নরক” মন্তব্য ও পাল্টা আক্রমণ: নীতীশের সমর্থনে নেমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং স্পষ্ট বলেন, “নীতীশ কুমার কোনো ভুল করেননি। এটা ইসলামিক রাষ্ট্র নয়, ভারত। এখানে আইন চলবে।” কিন্তু বিতর্ক চরম আকার নেয় যখন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে গিরিরাজ বলেন, “ও চাকরি নিতে না চাক কিংবা নরকে যাক…।” এই মন্তব্যের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেটে পড়েন পিডিপি নেত্রী ইলতিজা মুফতি। তিনি কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে লেখেন, “এই ধরনের নেতার মুখ ফিনাইল দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত।” মুসলিম মহিলাদের হিজাব স্পর্শ না করার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

জেডিইউ-এর সাফাই বনাম শরিকি অস্বস্তি: নীতীশের দল জেডিইউ বিষয়টিকে ‘পিতার স্নেহ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। বিহারের মন্ত্রী জামা খানের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন সফল মেয়ের মুখ যেন সমাজ দেখতে পায়। তবে এনডিএ-র শরিক দল নিষাদ পার্টির নেতা সঞ্জয় নিষাদের মন্তব্য অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “অন্য কোথাও হাত দিলে কী হতো?” যা নিয়ে নতুন করে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ও শালীনতার প্রশ্ন উঠছে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: বিরোধীদের দাবি, নীতীশ কুমারের বার্ধক্যজনিত সমস্যার সুযোগ নিয়ে বিজেপি তাঁকে দিয়ে এমন সব কাজ করাচ্ছে যা সাম্প্রদায়িক মেরুকরণে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, বিজেপির কট্টরপন্থীরা বিষয়টিকে “ভারতীয় আইনের প্রয়োগ” হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।