বিয়ের দরকার নেই, প্রাপ্তবয়স্কদের লিভ-ইন সম্পর্ক ‘বৈধ’! হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়ে স্বস্তি দম্পতিদের

ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ! বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হয়েও যদি দুই প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ একসঙ্গে থাকতে চান, তবে তাঁদের নিরাপত্তা দিতে রাষ্ট্র বাধ্য। ১২টি দম্পতির করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এমনই এক সাহসী ও আধুনিক রায় দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। বিচারপতি বিবেক কুমার সিং স্পষ্ট জানিয়েছেন, সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে, যা থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা যায় না।
আদালতের রায়ের প্রধান ৫টি দিক:
পছন্দের স্বাধীনতা: একজন মানুষ সাবালক হওয়ার পর কার সঙ্গে থাকবেন এবং কোথায় থাকবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ আইনি স্বাধীনতা তাঁর আছে। এতে পরিবার বা বাইরের কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
সামাজিক বনাম ব্যক্তিগত নৈতিকতা: বিচারপতি জানান, সমাজ লিভ-ইন সম্পর্ককে এখনও হয়তো পুরোপুরি মেনে নিতে পারেনি, কিন্তু আইনত এই সম্পর্ক নিষিদ্ধ নয়। সামাজিক সংস্কারের চেয়ে ব্যক্তিগত অধিকার বড়।
বিয়ের শংসাপত্র বাধ্যতামূলক নয়: দম্পতিরা বিবাহিত কি না, তার ভিত্তিতে তাঁদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। সুরক্ষা পাওয়ার জন্য বিয়ের প্রমাণপত্র থাকা জরুরি নয়।
পুলিশের ভূমিকা: আবেদনকারী দম্পতিরা পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিলেন। আদালত সাফ জানিয়েছে, এই ধরণের ক্ষেত্রে হুমকি এলেই পুলিশকে দ্রুত নিরাপত্তা দিতে হবে।
অতীতের ধারণা বদল: এর আগে কিছু আদালত লিভ-ইন দম্পতিদের সুরক্ষা দিতে অনীহা দেখালেও, বিচারপতি সিং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাকে মান্যতা দিয়ে সেই পুরনো ধারণা বদলে দিয়েছেন।
কেন এই রায় গুরুত্বপূর্ণ? ভারতে লিভ-ইন রিলেশনশিপ নিয়ে দীর্ঘদিনের এক আইনি ও সামাজিক ধোঁয়াশা ছিল। বিশেষ করে পরিবারের অমতে থাকা দম্পতিরা ক্রমাগত প্রাণের ভয়ে থাকেন। এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই রায় তাঁদের জন্য এক বড় আইনি রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। আদালত ১২টি আবেদনই মঞ্জুর করেছে এবং পুলিশকে সুরক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।