ভাগীরথীতে ডলফিন মৃত্যুতে ঘনীভূত রহস্য! ‘ইলেক্ট্রিক ছিপে’র দাপট না কি অন্য কিছু? বন দফতরের তল্লাশিতে চাঞ্চল্য।

ভাগীরথীর শান্ত জলে আবারও আশঙ্কার মেঘ। কাটোয়ার অদূরে অগ্রদ্বীপের কাছে নদীতে একটি মৃত ও পচাগলা গাঙ্গেয় ডলফিনের দেহ ভাসতে দেখাকে কেন্দ্র করে দানা বেঁধেছে রহস্য। মৎস্যজীবীদের দাবি, নদীতে ‘ইলেক্ট্রিক ছিপ’ ব্যবহার করে বেআইনিভাবে মাছ ধরার জেরেই প্রাণ হারিয়েছে বিপন্ন এই জলজ প্রাণীটি।
বন দফতরের ম্যারাথন তল্লাশি: খবর পাওয়ামাত্রই নড়েচড়ে বসেছে কাটোয়া বন দফতর। বুধবার দিনভর ভাগীরথীর ৩২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে স্পিডবোটে তল্লাশি চালানো হয়। তবে দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পরেও মৃত ডলফিনটির হদিশ মেলেনি। কাটোয়া বন দফতরের রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিনহা জানান, “আমরা খবর পেয়েই নৌকা নিয়ে তল্লাশি চালিয়েছি। সম্ভবত স্রোতের টানে দেহটি অন্য কোথাও ভেসে গিয়েছে।”
মৃত্যুহার কমলেও সংশয় কাটছে না: বন দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যেখানে ৮টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছিল, সেখানে ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ২টি ডলফিনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু পরিবেশবিদদের দাবি, পরিস্থিতি এখনও আশঙ্কাজনক। পরিবেশ কর্মী গণেশ চৌধুরী জানান, তিনি নিজে মৃত ডলফিনটির ছবি তুলে বন দফতরকে জানিয়েছিলেন। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, এক শ্রেণির অসাধু মৎস্যজীবী ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে মাছ ধরার ফলে ডলফিনদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে।
সংরক্ষণে প্রশ্নচিহ্ন? কাটোয়ার শাঁখাই ঘাটে সরকারি ডলফিন সংরক্ষণ কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার এই জাতীয় জলজ প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশ কর্মীরা। বর্তমানে এই এলাকায় প্রায় ৩২-৩৫টি ডলফিন রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাগীরথীকে দূষণমুক্ত রাখা এবং এই ‘ইলেক্ট্রিক ছিপ’ ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা না আনলে নদীর বাস্তুতন্ত্রের এই গর্বকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে।
বন দফতর নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দিলেও ডলফিনটির দেহ উদ্ধার না হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।