“বাপুকে হত্যা করেছে কংগ্রেসই!” শিবরাজ সিং চৌহানের পাল্টা তোপে কাঁপল সংসদ, ১২৫ দিনের কাজেও কেন ঘোর আপত্তি প্রিয়াঙ্কার?

কুড়ি বছরের পুরনো ‘মনরেগা’ বা একশো দিনের কাজের দিন শেষ! দেশজুড়ে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই বৃহস্পতিবার লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল মোদি সরকারের নতুন প্রকল্প— ‘বিকশিত ভারত গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ)’ বা সংক্ষেপে ‘ভিবি-জি রাম জি’ (VB-G RAM G) বিল।

বিলের মূল পরিবর্তন ও মাথাব্যথা: নতুন এই বিলে কাজের দিন ১০০ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ দিন করা হয়েছে। কিন্তু গোলমাল বেঁধেছে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে। মনরেগার সিংহভাগ কেন্দ্র দিলেও, নতুন এই বিলে ব্যয়ের ৬০ শতাংশ দেবে কেন্দ্র এবং বাকি ৪০ শতাংশ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। বিরোধীদের দাবি, রাজ্যগুলোর ওপর এই বিপুল আর্থিক বোঝা চাপিয়ে আসলে কৌশলে এই সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পটিকে বন্ধ করে দিতে চাইছে মোদি সরকার।

শিবরাজ সিং চৌহানের তীব্র আক্রমণ: বিলটি নিয়ে গত সোম থেকে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত টানা ১০ ঘণ্টা বিতর্ক চলে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান কংগ্রেসকে তুলোধোনা করে বলেন, “গান্ধীজির আদর্শকে কংগ্রেসই বারেবারে হত্যা করেছে— কখনও দেশভাগের সময়, কখনও জরুরি অবস্থা জারির সময়। আমরা তাঁর আদর্শে গরিবের মাথার ওপর ছাদ দিচ্ছি।” তিনি আরও দাবি করেন, ২০০৯ সালে স্রেফ ভোটের রাজনীতি করতেই ‘এনআরইজিএ’-এর সাথে মহাত্মা গান্ধীর নাম জুড়েছিল তৎকালীন কংগ্রেস।

মাঠে নামলেন প্রিয়াঙ্কা, সরব রাহুলও: সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে এই বিলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন ওয়েনাড়ের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি একে মোদি সরকারের ‘চালাকি’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, “রাজ্যগুলোর কাছে এত টাকা নেই। বিপুল ব্যয়ের চাপে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই প্রকল্পটি ধুঁকতে শুরু করবে। এটি সম্পূর্ণ গরিব বিরোধী এবং শ্রমিক বিরোধী বিল।” বিদেশে থাকলেও সামাজিক মাধ্যমে এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও।

এককাট্টা ‘ইন্ডিয়া’ শিবির: তৃণমূল থেকে সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি থেকে ডিএমকে— ইন্ডিয়া জোটের সমস্ত শরিকই মহাত্মা গান্ধীর নাম বাদ দেওয়া এবং রাজ্যগুলোর ওপর আর্থিক চাপ বাড়ানোর প্রতিবাদে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখায়। তবে বিরোধীদের স্লোগান আর তুমুল হট্টগোলের মধ্যেই অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বিলটি পাশ করিয়ে নেন।

এখন প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের সাথে কেন্দ্রের এই নতুন ‘শেয়ারিং’ ফর্মুলায় কি সত্যিই গ্রামীণ শ্রমিকদের ভাগ্য ফিরবে, নাকি অর্থসংকটে পড়বে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের রুটিরুজি?