নদীয়া সীমান্তে ধরপাকড়! কৃষিকাজের আড়ালে কি চলছে ড্রাগ পাচার? বিএসএফ-এর হাতে ধৃত মিঠুন মিঞা

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ব্যবহার করে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ (ফেনসিডিল) পাচারের চেষ্টা ফের রুখে দিল বিএসএফ। মঙ্গলবার রাতে নদীয়া জেলার বানপুর সীমান্ত থেকে এক বাংলাদেশি চোরাচালানকারীকে হাতেনাতে পাকড়াও করেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা। ধৃতের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৪২২ বোতল নিষিদ্ধ সিরাপ।

মধ্যরাতে বিএসএফ-এর হানা

বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে নদীয়া সীমান্তের ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা টহল দিচ্ছিলেন। সেই সময় বানপুর সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে এক যুবককে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। বিএসএফ জওয়ানদের দেখতে পেয়েই সে পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ডেল্টা কোম্পানির জওয়ানরা তাড়া করে তাঁকে ধরে ফেলেন। তল্লাশি চালিয়ে তাঁর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ সিরাপ উদ্ধার হয়।

কে এই মিঠুন মিঞা?

আটক হওয়া যুবকের নাম মিঠুন মিঞা। বিএসএফ-এর প্রাথমিক জেরায় সে জানিয়েছে, তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের জীবননগর থানার নতুন পাড়া এলাকায়। বুধবার বিএসএফ ধৃতকে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ মিঠুনকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর জেলা দায়রা আদালতে পেশ করেছে।

পাচারের ‘সেফ জোন’ কি নদীয়া?

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল জানিয়েছেন, ধৃতের বিরুদ্ধে এনডিপিএস (NDPS) আইনসহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে এই বিশাল পরিমাণ ফেনসিডিল সে কোথা থেকে জোগাড় করেছিল এবং ওপারের কার কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

কেন বারবার এই সীমান্তে পাচার হয়?

  • কাঁটাতারের অভাব: সীমান্তের বেশ কিছু জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নেই, যা পাচারকারীদের সুবিধা করে দেয়।

  • কৃষিকাজের আড়াল: সীমান্ত এলাকায় চাষাবাদের সুযোগ নিয়ে ফসলের মধ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্য লুকিয়ে এপার-ওপার করা হয়।

গরু, সোনা বা মাদক—কৃষ্ণগঞ্জ-গেদে সীমান্ত বরাবর বিএসএফ-এর কড়া নজরদারি থাকলেও পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য থামছে না। তবে মিঠুন মিঞার গ্রেপ্তারির পর এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত বড় কোনো রাঘববোয়ালের নাম উঠে আসে কি না, সেটাই এখন দেখার।