ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও ডাক পড়বে শুনানিতে! আজ থেকেই নোটিশ পাঠাচ্ছে কমিশন, প্রস্তুত রাখুন ১১টি নথি

রাজ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর এবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপে পা রাখল নির্বাচন কমিশন। আজ, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) থেকেই শুরু হচ্ছে ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ বা SIR-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। কমিশনের ইআরও-রা (ERO) আজ সকাল থেকেই ভোটারদের শুনানির জন্য নোটিশ পাঠানো শুরু করছেন। তালিকায় নাম থাকলেই যে রেহাই মিলবে, এমনটা ভাবার কারণ নেই বলেই ইঙ্গিত দিয়েছে কমিশন।

লক্ষ্য ৩২ লক্ষ ‘ম্যাপহীন’ ভোটার
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে প্রায় ৩২ লক্ষ ‘ম্যাপহীন’ (Unmapped) ভোটারকে শুনানির জন্য ডাকা হতে পারে। মূলত ২০০২ সালের তথ্যের সাথে বর্তমান তালিকার যে ভোটারদের তথ্যে অসঙ্গতি রয়েছে, তাঁদেরই এই স্ক্রুটিনির মুখে পড়তে হবে। খসড়া তালিকায় নাম থাকার অর্থ এই নয় যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাগরিকত্ব বা ভোটাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না, বরং স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই কড়াকড়ি।

কীভাবে আসবে নোটিশ?
কমিশনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নোটিশের দুটি কপি তৈরি করা হবে। একটি ভোটারকে সরাসরি দেওয়া হবে এবং অন্যটিতে ভোটারের স্বাক্ষর নিয়ে তা বিএলও (BLO) বা বুথ লেভেল অফিসারের কাছে জমা থাকবে। নোটিশ পাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ে ভোটারদের শুনানির জন্য সশরীরে উপস্থিত হতে হবে।

কোথায় হবে শুনানি? কোন কোন নথি লাগবে?
শুনানির জন্য ভোটারদের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (DM), মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট (SDO) বা ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের (BDO) দপ্তরে ডাকা হবে। কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, যাচাইকরণের সময় ভোটারদের ১১টি নির্দিষ্ট নথি (যেমন আধার কার্ড, রেশন কার্ড, জন্ম সার্টিফিকেট ইত্যাদি) হাতের কাছে প্রস্তুত রাখতে হবে। মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখানো বা ভুল তথ্য সংক্রান্ত যে অভিযোগগুলো জমা পড়েছে, সেগুলোরও আলাদাভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে।

উত্তরবঙ্গ সফরে স্পেশাল রোল অবজার্ভার
রাজ্যজুড়ে এই কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে বড়দিনের আগেই উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন স্পেশাল রোল অবজার্ভার সুব্রত গুপ্ত। উত্তরের বিভিন্ন জেলায় SIR-প্রক্রিয়া ঠিকমতো চলছে কি না এবং কতদূর কাজ এগোল, তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন তিনি।

সামনের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা নিয়ে কমিশনের এই অতি-সক্রিয়তা রাজনৈতিক মহলেও যথেষ্ট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।