মুর্শিদাবাদে হলুদ সরষে ক্ষেতে লাল আতঙ্ক! উদ্ধার ব্যাগ ভর্তি তাজা সকেট বোমা, বড়সড় নাশকতার ছক?

শীতের সকালে সরষে ক্ষেতের হলুদ বাহার দেখে যখন কৃষকরা কাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই সামনে এল হাড়হিম করা দৃশ্য। মুর্শিদাবাদ জেলার রানীনগর থানা এলাকার নরেন্দ্রপুর মাঠে দেখা গেল থরে থরে সাজানো এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাজা সকেট বোমা। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
গোপন অভিযানে পুলিশের সাফল্য
পুলিশ সূত্রে খবর, রানীনগর থানার কাছে গোপন সূত্রে তথ্য আসে যে নরেন্দ্রপুরের একটি নির্জন সরষে ক্ষেতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত করা হয়েছে। সেই খবরের ভিত্তিতেই সাতসকালে বিশাল পুলিশবাহিনী ওই এলাকায় অভিযান চালায়। তল্লাশিতে মাঠের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় শক্তিশালী একাধিক সকেট বোমা। পুলিশ এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেয়।
প্রাণহানির আশঙ্কা থেকে রক্ষা
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে এলাকায় বোমাগুলো পাওয়া গিয়েছে, সেখানে প্রতিদিন বহু কৃষক ও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করেন। কোনোভাবে একটি বোমার ওপর পা পড়লে বা নাড়াচাড়া লাগলে বড়সড় বিস্ফোরণ ঘটতে পারত। ঝরে যেতে পারত বহু তাজা প্রাণ। আতঙ্কিত এক গ্রামবাসীর কথায়, “ক্ষেতের ভেতর ওভাবে বোমা ছড়িয়ে রাখা মানে যে কাউকে মেরে ফেলার ছক। আমরা ভয়ে আর মাঠে যেতে পারছি না।”
ময়দানে বম্ব স্কোয়াড
উদ্ধার হওয়া বোমাগুলির তীব্রতা এতটাই ছিল যে পুলিশ দ্রুত বম্ব স্কোয়াডে খবর দেয়। বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বোমাগুলিকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান এবং একে একে সবকটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়। তবে কে বা কারা এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সরষে ক্ষেতের আড়ালে লুকিয়ে রেখেছিল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রানীনগর থানার পুলিশ।
সামনে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি বা অন্য কোনো নাশকতার উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। এই ঘটনার পর থেকে গোটা মুর্শিদাবাদ সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।