আরজি কর মামলা ছাড়ল সুপ্রিম কোর্ট! এবার লড়াই ফিরল কলকাতা হাইকোর্টে, বড় নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা থেকে এবার সরে দাঁড়াল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বুধবার বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এই মামলা সংক্রান্ত সমস্ত শুনানি এবার থেকে কলকাতা হাইকোর্টেই হবে।

হাইকোর্টে ফিরল লড়াই: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে এই নারকীয় ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্ট নিজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি গ্রহণ করেছিল। তবে বুধবার শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, আরজি কর সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র এবং মামলা এখন থেকে কলকাতা হাইকোর্ট শুনবে। একইসঙ্গে নির্যাতিতার বাবা-মাকে মামলার স্টেটাস রিপোর্টের (Status Report) একটি প্রতিলিপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা, যাতে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে তাঁরা অবগত থাকতে পারেন।

সিবিআই তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ ও বিচারপ্রক্রিয়া
শিয়ালদহ আদালত ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আজীবন কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে। তবে নির্যাতিতার পরিবার শুরু থেকেই দাবি করে আসছে যে, সঞ্জয় রায় একা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। সিবিআই তদন্তের গতি এবং বাকি অভিযুক্তদের অধরা থাকা নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন তাঁরা। এমনকি সম্প্রতি নবান্ন অভিযানেও পথে নামতে দেখা গিয়েছিল তাঁদের। সিবিআই তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে হাইকোর্টে নির্যাতিতার পরিবারের করা আবেদন এখন নতুন করে গুরুত্ব পেতে পারে।

কেন এই সিদ্ধান্ত?
আইনি মহলের মতে, ঘটনার প্রাথমিক বিচার প্রক্রিয়া এবং নিম্ন আদালতের রায় ঘোষণার পর আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব এখন স্থানীয় উচ্চ আদালত অর্থাৎ কলকাতা হাইকোর্টই সামলাবে। সুপ্রিম কোর্ট নিরাপত্তা এবং সিবিআই তদন্তের প্রাথমিক গতিপ্রকৃতি নিয়ে এর আগে একাধিক নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু এখন মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির ভার ফিরে এল রাজ্যের প্রধান আইনি মঞ্চেই।

আশা ও আশঙ্কার দোলাচল
সঞ্জয় রায় বাদে আর যারা এই ঘটনার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল বলে পরিবারের সন্দেহ, তাঁদের শাস্তি হবে কি না—এখন সেটাই বড় প্রশ্ন। মামলা হাইকোর্টে ফেরায় নতুন করে বিচারের আশায় বুক বাঁধছেন মৃত চিকিৎসকের পরিবার ও আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা।