তলানিতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক? মুখ খুললেন তৌহিদ হোসেন, দিল্লির কড়া পদক্ষেপের পর বাড়ছে জল্পনা

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে যে শীতলতা দেখা দিয়েছিল, তা এবার চরম অস্বস্তির পর্যায়ে পৌঁছেছে। ঢাকা ও নয়াদিল্লির বর্তমান সম্পর্ক কি তবে কোনও অন্ধকার গলিতে প্রবেশ করছে? বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশমন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সাম্প্রতিক মন্তব্যে কিন্তু তেমনই এক আশঙ্কার ছায়া ফুটে উঠেছে।
দিল্লির কড়া বার্তা: তলব হাই কমিশনারকে
ঘটনার সূত্রপাত বাংলাদেশের ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর একটি বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। ঢাকার একটি জনসভায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলি নিয়ে সরাসরি হুমকি দেন তিনি। এই প্ররোচনামূলক মন্তব্যের প্রতিবাদে বুধবার নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে তলব করে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। ভারতের পক্ষ থেকে এই কড়া পদক্ষেপকে যদিও ‘রুটিন ডিপ্লোম্যাটিক স্টেপ’ হিসেবেই দেখছে ঢাকা।
স্বীকারোক্তি: “সম্পর্ক নিয়ে বলা কঠিন”
গত বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তৌহিদ হোসেন স্বীকার করে নেন যে, দুই দেশের সম্পর্কে বর্তমানে যথেষ্ট টানাপড়েন চলছে। তিনি বলেন, “এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে ঢাকা ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক কোনও নতুন অধ্যায়ে পৌঁছেছে কি না, তা বলা মুশকিল। আমাদের কঠোর বাস্তবতা স্বীকার করতেই হবে।” তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আলোচনার মাধ্যমেই হয়তো সম্পর্ক আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
কেন বাড়ছে দূরত্ব?
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একাধিক ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। হাসনাত আবদুল্লাহর মতো নেতাদের উসকানিমূলক বয়ান সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। ভারতের বিদেশমন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, সার্বভৌমত্ব বা আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিয়ে কোনও আপত্তিকর মন্তব্য বরদাস্ত করা হবে না।
ভবিষ্যৎ কোন পথে?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে দিল্লির অবস্থান অত্যন্ত সতর্ক। অন্যদিকে, বাংলাদেশের উপদেষ্টা স্বীকার করেছেন যে সমস্যা আগেও ছিল, তবে নতুন সরকারের সময় তা আরও প্রকট হয়েছে। এখন দুই পক্ষ আলোচনার টেবিলে বসে কীভাবে এই বরফ গলায়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।