কলকাতায় সেতারের মহোৎসব! শীতের সন্ধ্যায় সুরের মূর্ছনায় মাতবেন কুমার বোস-বিক্রম ঘোষেরা

শহর কলকাতার শীতকালীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে যোগ হতে চলেছে এক নতুন পালক। আগামী ২৩ এবং ২৪ ডিসেম্বর বালিগঞ্জের ‘দাগা নিকুঞ্জে’ বসতে চলেছে দু’দিনের শাস্ত্রীয় সেতারবাদনের অনন্য আসর— ‘দ্য ক্যালকাটা সিতার কনসার্ট’। ‘যাত্রাপথ কালচারাল সোসাইটি’র উদ্যোগে এবং বিশিষ্ট সেতারবাদক অভিরূপ ঘোষের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই সম্মেলনে সহযোগিতা করছে ভারত সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং ভারতীয় বিদ্যা ভবন।

এক মঞ্চে নক্ষত্র সমাবেশ
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বিশ্ববিখ্যাত শিল্পীদের সুরের জাদুতে মুগ্ধ হবেন সঙ্গীতপ্রেমীরা। সেতারের মূর্ছনা ছড়াবেন:

বিষ্ণুপুর ঘরানার বিদুষী মিতা নাগ।

সেনিয়া মাইহার ঘরানার পণ্ডিত পার্থ বসু এবং পণ্ডিত নীলাদ্রি সেন।

নতুন প্রজন্মের প্রতিশ্রুতিমান শিল্পী অভিষেক মল্লিক ও অভিরূপ ঘোষ।

তবলার সংগতে থাকবেন কিংবদন্তি পণ্ডিত কুমার বোস, পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ, পণ্ডিত সমর সাহা এবং রোহেন বসুর মতো প্রথিতযশা শিল্পীরা।

সম্মাননা ও উৎসর্গ
সঙ্গীত জগতের মহীরুহদের কুর্নিশ জানাতে এ বছর ‘রৌপ্য জীবনকৃতি সম্মান’ প্রদান করা হবে কিংবদন্তি তবলাবাদক পণ্ডিত কুমার বোস, বিশিষ্ট সন্তুরবাদক পণ্ডিত তরুণ ভট্টাচার্য এবং পপ-সম্রাজ্ঞী ঊষা উত্থুপকে। এই গোটা আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয়েছে প্রয়াত সেতার গুরু আচার্য পণ্ডিত শ্যামল চট্টোপাধ্যায় এবং ভারতের সকল প্রবাদপ্রতিম সেতারবাদকদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে।

নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াস
শৈল্পিক উৎকর্ষের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতাকেও গুরুত্ব দিচ্ছে ‘যাত্রাপথ’। কর্ণধার অভিরূপ ঘোষ জানান, শুধু কনসার্ট নয়, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ঐতিহ্য স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “আমরা চাই নতুন প্রজন্ম শুধু গান শুনুক না, সেতারের সুপ্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কেও জানুক।”

তবলাবাদক রোহেন বসুর দাবি, এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই শহরের সংস্কৃতিমনস্ক মানুষের মধ্যে বিপুল সাড়া ফেলেছে। শিল্পী মিতা নাগের মতে, এই সম্মেলন কলকাতার পুরনো দিনের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ঐতিহ্যের স্বাদকে নতুন রূপে ফিরিয়ে আনবে।

শীতের সন্ধ্যায় ধ্রুপদী সুরের এই মহাসম্মেলন যে কলকাতার সাংস্কৃতিক মানচিত্রে এক উজ্জ্বল নজির গড়বে, তা বলাই বাহুল্য।