যুদ্ধ হবে আকাশে, তবে কেন মাটিতে এত সেনার ভিড়? প্রবীণ কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে দেশজুড়ে তোলপাড়

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাঠামো নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চৌহান। তাঁর দাবি, বর্তমান সময়ে যুদ্ধের চরিত্র বদলেছে। তাই ১২ থেকে ১৫ লক্ষ পদাতিক সেনার (Infantry) বিশাল বহর না রেখে তাঁদের দেশের অন্যান্য জরুরি কাজে ব্যবহার করা হোক।
পৃথ্বীরাজের যুক্তিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’: পুনের এক অনুষ্ঠানে চৌহান দাবি করেন, অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় পদাতিক বাহিনীকে এক কিলোমিটারও এগোতে হয়নি। পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয়েছে আকাশপথে। তাঁর কথায়, “পাকিস্তানের তুলনায় আমাদের ১০ লক্ষ পদাতিক সেনা বেশি আছে। কিন্তু ভবিষ্যৎ যুদ্ধ হবে ড্রোন, বিমান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে। সেখানে এত বিপুল সংখ্যক সেনার উপযোগিতা কোথায়?”
বিমান বাহিনী বনাম পাকিস্তান: কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা আরও অস্বস্তিকর প্রশ্ন তুলেছেন অপারেশন সিঁদুরের ফলাফল নিয়ে। তাঁর দাবি, পাকিস্তান ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ফলেই ভারতের বেশ কিছু বিমানঘাঁটি থেকে পাল্টা হামলা তৎক্ষণাৎ শুরু করা যায়নি। এই কারণেই তিনি বায়ুসেনার দক্ষতা বৃদ্ধিতে বেশি জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
অগ্নিবীর ও সেনার গুরুত্ব: অন্যদিকে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক যখন অপারেশন সিঁদুরে ‘অগ্নিবীর’-দের সাফল্য দেখে তাঁদের চাকরির মেয়াদ ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব দিচ্ছে, তখন পৃথ্বীরাজ চৌহানের এই মন্তব্য এক নতুন বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আইনশৃঙ্খলা ছাড়া অন্যান্য প্রশাসনিক কাজেও সেনার একাংশকে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সেনাকর্তাদের পাল্টা যুক্তি: তবে পৃথ্বীরাজ চৌহানের এই প্রস্তাবকে মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছেন না অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি:
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শিক্ষা: বিমান হামলা দিয়ে জমি ধ্বংস করা যায়, কিন্তু সেই জমি কব্জা করতে পদাতিক বাহিনীর কোনো বিকল্প নেই।
সীমানা পাহারা: ভারতের মতো বিশাল সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে ড্রোন থাকলেও জওয়ানদের সশরীরে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক।
মানসিকতা পরিবর্তন: জওয়ানদের দীর্ঘ সময় অ-সামরিক কাজে ব্যবহার করলে তাঁদের যুদ্ধের মানসিকতা বা ‘ফাইটিং স্পিরিট’ নষ্ট হতে পারে।
প্রযুক্তি বনাম জনবল—আগামীর ভারতীয় সেনাবাহিনী কোন পথে হাঁটবে, পৃথ্বীরাজ চৌহানের মন্তব্য সেই দীর্ঘস্থায়ী বিতর্ককে আবারও জনসমক্ষে নিয়ে এল।