ভোটার কার্ডে আধার কি বাধ্যতামূলক? বিএলও অ্যাপের নতুন ফিচারে তুঙ্গে বিতর্ক

মঙ্গলবার রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (SIR/সার) খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরই এক নতুন বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়েছে। বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও (BLO) অ্যাপ খুলতেই আধার সংযুক্তিকরণ নিয়ে এমন কিছু নির্দেশ দেখা যাচ্ছে, যা নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র ধন্দ। প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচন কমিশন আধার নম্বর দেওয়াকে ‘ঐচ্ছিক’ বললেও এখন কি তবে ঘুরপথে তা বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা চলছে?
❓ বিএলও অ্যাপে কী এমন দেখা যাচ্ছে?
এনিউমারেশন ফর্ম পূরণের সময় আধার নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক নয় বলে আগে জানানো হয়েছিল। ফলে বহু ভোটার যেমন আধার নম্বর দেননি, তেমনই অনেক বিএলও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফর্ম আপলোড করতে গিয়ে আধার নম্বর ছাড়াই তা সাবমিট করেছিলেন।
কিন্তু মঙ্গলবার বিএলও-রা অ্যাপ খুলে দেখেন:
-
যাঁদের আধার নম্বর দেওয়া হয়নি, তাঁদের নামের পাশে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে ‘অ্যাড আধার’ (Add Aadhaar)।
-
অর্থাৎ, ওই ভোটারদের আধার নম্বর সংগ্রহ করে ফের এনিউমারেশন ফর্ম আপলোড করতে হবে বলে মনে করছেন বিএলও-রা।
-
অন্যদিকে, যাঁদের আধার দেওয়া হয়েছে, তাঁদের পাশে লেখা ‘আধার অ্যাডেড’।
⚖️ আধার কি নাগরিকত্বের প্রমাণ? উঠছে প্রশ্ন
সুপ্রিম কোর্ট এবং নির্বাচন কমিশন বারবার স্পষ্ট করেছে যে, আধার কার্ড ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। ভোটার তালিকায় আধার সংযোজনকে সরকারিভাবে ‘আবশ্যিক’ বলা না হলেও, বিএলও অ্যাপের এই নতুন ফিচার সেই দাবিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের ধারণা, ভোটার তালিকার শুদ্ধিকরণের নামে আসলে ঘুরপথে আধারকেই বাধ্যতামূলক করার প্রক্রিয়া চলছে।
💻 অনলাইন ও অফলাইন ফর্মের ফারাক
সূত্রের খবর, যাঁরা অনলাইনে এনিউমারেশন ফর্ম পূরণ করেছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আধার নম্বর উল্লেখ করা একপ্রকার বাধ্যতামূলক ছিল। কারণ, অনলাইনে ফর্ম ফিল-আপ করার জন্য প্রয়োজন হয় ডিজিটাল সিগনেচার, যা সরাসরি আধারের সঙ্গে যুক্ত। ফলে অনলাইনে আবেদনকারীদের তথ্য ইতিমধ্যেই আধারের মাধ্যমে আপলোড হয়ে গিয়েছে। সমস্যা তৈরি হয়েছে মূলত অফলাইনে ফর্ম জমা দেওয়া কয়েক কোটি ভোটারকে নিয়ে।
এখন নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে নতুন করে কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিএলও এবং সাধারণ ভোটাররা।