বাংলাভাষী বলে ‘পুশব্যাক’! গর্ভবতী অবস্থায় জেল খাটার পর এবার অভিষেকের দুয়ারে বীরভূমের সোনালি

শুধু বাংলাভাষী হওয়ার অপরাধে কি জুটেছিল ‘অনুপ্রবেশকারী’র তকমা? দিল্লির রোহিণী বস্তি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করে দেওয়ার সেই ভয়াবহ স্মৃতি এখনও টাটকা বীরভূমের সোনালি খাতুনের মনে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দীর্ঘ ৬ মাসের লড়াইয়ের পর দেশে ফিরেছেন তিনি। এবার সপরিবারে কলকাতার পথে সোনালি। আগামী ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন তিনি।

দিল্লি থেকে ওপার বাংলার জেল: এক গর্ভবতীর লড়াই চলতি বছরের মে মাসে অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে সোনালি খাতুনকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় প্রশাসন। সোনালির বাবা ভদু শেখের অভিযোগ ছিল, তাঁর মেয়ের জন্ম বীরভূমে হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র বাংলাভাষী হওয়ার কারণে তাঁকে ও তাঁর সন্তানকে ওপারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সোনালি যখন বাংলাদেশের জেলে দিন কাটাচ্ছিলেন, তখন তিনি ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

পাশে দাঁড়াল তৃণমূল, আইনি লড়াইয়ে জয় এই মানবিক সংকটের সময় সোনালির পরিবারের পাশে দাঁড়ান রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়। শীর্ষ আদালত মানবতার খাতিরে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি ও তাঁর ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশের পর গত ৫ ডিসেম্বর ভারতে ফেরেন তিনি।

অপেক্ষা এখনও শেষ হয়নি সোনালি ফিরলেও তাঁর লড়াই এখনও অর্ধেক রয়ে গিয়েছে।

সোনালির স্বামী দানিশ শেখ এখনও বাংলাদেশের জেলে বন্দি।

পাইকরের তরুণী সুইটি ও তাঁর দুই শিশু সন্তানও এখনও সীমান্ত পার হতে পারেননি।

অভিষেক-সোনালি সাক্ষাৎ: নয়া মোড়? রামপুরহাটের বাবার বাড়িতে ফেরার পর সোনালিকে কয়েক দিন হাসপাতালেও কাটাতে হয়েছে। এখন তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটা স্থিতিশীল। আগামী ১৯ ডিসেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই সাক্ষাতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। এই ইস্যুকে সামনে রেখে তৃণমূল যে বিজেপি শাসিত দিল্লির প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘বাঙালি বিদ্বেষ’-এর অভিযোগকে আরও তীব্র করবে, তা বলাই বাহুল্য।