“ঝুঁকতা ওহি হ্যায়, জিসমে জান হ্যায়…”-‘মেসি কাণ্ড’ নিয়ে কী বললেন অভিষেক?

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির ইভেন্টে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলার ঘটনায় রাজ্য সরকারের তরফে যখন একের পর এক কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে (SIT গঠন, DGP রাজীব কুমারকে শোকজ, পুলিশকর্তা সাসপেন্ড এবং ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পদত্যাগ), ঠিক তখনই এই প্রসঙ্গে নীরবতা ভাঙলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে থাকার পর রাজ্যে ফিরেই তিনি এই বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তৃণমূল সাংসদ স্পষ্ট জানান, “ঝুঁকতা ওহি হ্যায়, জিসমে জান হ্যায়…।” (নত হয় সেই, যার মধ্যে প্রাণ আছে…)
❓ কেন বারবার প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হচ্ছে? কুম্ভমেলা ও দিল্লি পদপিষ্টের প্রসঙ্গ টানলেন অভিষেক
যুবভারতী কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্রুত পদক্ষেপের পরও কেন তৃণমূলকে বারবার প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে বিজেপি-শাসিত রাজ্যের অতীতের ঘটনা উল্লেখ করেন অভিষেক।
তাঁর কথায়, “যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যা হয়েছে তার এক ঘণ্টার মধ্যে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুলিশকর্তা থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে। তারপরও আমাদের কেন বারবার প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হচ্ছে?”
এরপরই তিনি কুম্ভমেলা এবং দিল্লি স্টেশনের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টানেন। তিনি প্রশ্ন করেন, “চলতি বছর কুম্ভ মেলায় যখন বহু মানুষের মৃত্যু হয়, তখন তো কেউ প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়নি প্রধানমন্ত্রী বা যোগী আদিত্যনাথকে? গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। সেই নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠেছে? এই ঘটনায় কোনও বিজেপি নেতাকে একটি প্রশ্নেরও সম্মুখীন হতে হয়েছে? কোনও তদন্তও হয়নি, কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি, এমনকী, ক্ষমাও চাওয়া হয়নি।”
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও প্রশ্ন, “যুবভারতীর বিশৃঙ্খলার এক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ জনগণের কাছে ক্ষমা চান। তিনি তাঁর দায়িত্ব থেকে পিছু হটেননি। এর পরেও কেন এত প্রশ্ন উঠছে?”
যুবভারতী কাণ্ডে মমতার কড়া পদক্ষেপ
প্রসঙ্গত, যুবভারতী কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটি প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরই বড়সড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
-
রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তা DGP রাজীব কুমারকে শোকজ করা হয়েছে।
-
বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমারকেও শোকজ করা হয়।
-
ডিসি অনীশ সরকারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
-
ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিংকেও শোকজ করা হয়েছে।
-
ঘটনার তদন্তের জন্য SIT গঠন করা হয়েছে।
-
সর্বোপরি, ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পদত্যাগ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই কড়া পদক্ষেপের পর, বিরোধী শিবির যখন লাগাতার আক্রমণ শানাচ্ছে, ঠিক সেই সময় অভিষেকের এই মন্তব্য জাতীয় স্তরে শাসক দলের অবস্থান স্পষ্ট করল বলে মনে করা হচ্ছে।