রাষ্ট্রসঙ্ঘে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা ভারতের, কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলতেই পাল্টা ইমরান খান ও সিন্ধু জলবন্টন চুক্তির প্রসঙ্গ তুললেন ভারতীয় দূত

সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে আরও একবার কড়া বার্তা দিল ভারত। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় ভারতের স্থায়ী দূত হরিশ পর্বথানেনী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সর্বশক্তি দিয়ে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের দমন করা হবে।

‘লিডারশিপ ফর পিস’ শীর্ষক আলোচনায় জম্মু-কাশ্মীর এবং সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি প্রসঙ্গে পাকিস্তানের দূত অসিম ইফতিকার আহমেদ একাধিক প্রশ্ন তোলেন। ভারতীয় দূত তাঁর প্রশ্নের তীব্র সমালোচনা করেন।

“ভারতের জনগণের ক্ষতি করার মানসিকতা”

হরিশ পর্বথানেনী বলেন, “এই আলোচনায় জম্মু ও কাশ্মীর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের অযাচিত উল্লেখ ভারতের জনগণের ক্ষতি করার প্রতি তাদের মানসিকতারই প্রমাণ দেয়। বিভাজন সৃষ্টির লক্ষ্যে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সমস্ত বৈঠকে সেই মানসিকতাকে আরও উস্কে দিতে চান নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য দেশের এক কূটনীতিক। এর বাইরে তাঁর কাছ থেকে নির্ধারিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের আশা করা যায় না।”

তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং আগামীদিনেও থাকবে।

ইমরান খান, সেনা প্রধানের ক্ষমতা ও গণতন্ত্রের অভাব

কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদ ও কাশ্মীরবাসীর ইচ্ছানুযায়ী পদক্ষেপের ইসলামাবাদের দাবিকে এদিন ফুৎকারে উড়িয়ে দেন ভারতীয় দূত। জবাবে, জেলবন্দি পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং পাক সেনার মধ্যে থাকা ক্ষমতার দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি পাকিস্তানকে তীব্র কটাক্ষ করেন।

হরিশ পর্বথানেনী বলেন, “জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান জানানোর অনন্য পন্থা রয়েছে পাকিস্তানের কাছে। প্রধানমন্ত্রীকে জেলে বন্দি করা, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা এবং চিফ অফ ডিফেন্স ফোর্সকে আজীবনের জন্য রক্ষাকবচ প্রদান করা, এই সবকিছুই রয়েছে সেই তালিকায়।” তিনি সদ্য নিযুক্ত পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে আজীবন আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি দেওয়ার পাক প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকেও তীব্র সমালোচনা করেন।

সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি স্থগিত প্রসঙ্গে কড়া বার্তা

পহেলগাঁও হামলার পর ভারত কর্তৃক ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি স্থগিত করার প্রসঙ্গে হরিশ বলেন, “৬৫ বছর আগে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং ভরসা করে এই চুক্তিটি করা হয়। কিন্তু, দীর্ঘ সাড়ে ছয় দশক ধরে ৩টি যুদ্ধ এবং কয়েক হাজার জঙ্গি হামলা চালিয়ে পাকিস্তান সেই মানসিকতা নষ্ট করে দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বিগত ৩-৪ দশকে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলায় প্রায় ১০ হাজার ভারতীয় প্রাণ হারিয়েছেন। সম্প্রতি পহেলগাঁওয়ের হামলাতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।”