আরজি কর কাণ্ড: সাজা ঘোষণার পরেও বিচার শেষ হয়নি! আইন হাতে নেওয়ার হুঁশিয়ারি নির্যাতিতার মায়ের, CBI-এর তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ

আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় (RG Kar Incident) এক অভিযুক্তের সাজা ঘোষণার পরেও ন্যায়বিচার শেষ হয়নি—এই দাবিতেই অনড় রয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, এই অপরাধে একজন নয়, একাধিক ব্যক্তি জড়িত। প্রকৃত বিচার না পেলে প্রয়োজনে আইন হাতে তুলে নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নির্যাতিতার মা।

সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিলোত্তমার বাবা-মা সিবিআই-এর তদন্তের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সিবিআই তদন্ত নিয়ে নির্যাতিতার বাবার ক্ষোভ
নির্যাতিতার বাবা দাবি করেন, শিয়ালদহ আদালতে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব শেষ হওয়ার পরদিনই সেই অনুযায়ী রায়ের কপি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সিবিআই সেই বিষয়গুলো গুরুত্ব দেয়নি। তাঁর অভিযোগ, হাইকোর্টে প্রায় সাত মাস মামলা চলার পর তা ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। মামলা গৃহীত হলেও এখনও শুনানি শুরু হয়নি।

তিনি বলেন, “আদালতে সিবিআই নিজেই বলেছিল তারা কোনও নির্দিষ্ট তদন্ত করেনি। কেন এমন তদন্ত হয়নি, আমরা সেই প্রশ্নের উত্তর চাই।” তাঁর বিস্ফোরক দাবি, এই ঘটনায় (RG Kar Incident) একা সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায় নয়, আরও অনেকেই জড়িত, যার মধ্যে একজন মহিলাও থাকতে পারেন। তাঁর কথায়, “ডিএনএ রিপোর্টে একজন মহিলার ডিএনএ-সহ আরও ছয়জন পুরুষের ডিএনএ পাওয়া গিয়েছে। আমরা জানি কারা তাঁরা, কিন্তু তদন্ত করে সত্য সামনে আনার দায়িত্ব সিবিআইয়ের।”

হাসপাতালের দুর্নীতি ফাঁস করায় খুন?
অন্যদিকে, তিলোত্তমার মা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে তাঁর মেয়ে আরজি কর হাসপাতালের ভেতরের দুর্নীতির নানা তথ্য জেনে ফেলেছিল, আর সেই কারণেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে প্রায়ই ভোর চারটে পর্যন্ত জেগে থাকত, কিন্তু সেই রাতে সে কীভাবে ঘুমিয়ে পড়ল, তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না।

তাঁর প্রশ্ন, “ডিউটির সময় ঘুমিয়ে পড়েছিল, এই কথা আমি বিশ্বাস করি না। ওই রাতে যাঁরা কর্তব্যরত ছিলেন, তাঁদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। আরজি করের মতো বড় হাসপাতালে একজন ঢুকে আমার মেয়েকে খুন করে বেরিয়ে গেল, অথচ কেউ কিছু বুঝল না, এটা কীভাবে সম্ভব?”

নির্যাতিতার মা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, তাঁর মেয়ের চোখ দিয়ে জল নয়, রক্ত বেরিয়েছিল। সেই দৃশ্য আজও তাঁর চোখে ভাসে। তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন, তাঁর মেয়ের মৃত্যুর পূর্ণ বিচার পেতে যে কোনও মূল্যে আইন হাতে তুলতেও পিছপা হবেন না।