বন্ডি বিচে বন্দুকবাজের হামলা, ১৬ জনের মৃত্যু, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গুলিবিদ্ধ ফলবিক্রেতা আহমেদ আল আহমেদই ‘রিয়েল হিরো’,

সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকত এলাকায় ইহুদিদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘হানুকা বাই দ্য সি’-তে বন্দুকবাজের হামলার ঘটনায় মর্মান্তিক পরিস্থিতির মধ্যে এক রিয়েল লাইফ হিরোর জন্ম হলো। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরস্ত্রভাবে আততায়ীকে জাপটে ধরে বন্দুক ছিনিয়ে নেন ৪৩ বছর বয়সী ফলবিক্রেতা আহমেদ আল আহমেদ। এই বীরত্বের কারণে বহু মানুষের জীবন রক্ষা পায়।

ঠিক কী ঘটেছিল? রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে সাতটা নাগাদ বন্ডি বিচে ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে দুই বন্দুকবাজ (সম্পর্কে বাবা ও ছেলে)। মুহূর্তে ঘটনাস্থল রক্তাক্ত হয়ে ওঠে এবং প্রায় ১১ জনের প্রাণ যায়। সোমবার সেই সংখ্যা বেড়ে ১৬ হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় ২০ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এরই মধ্যে, গাছের আড়াল থেকে যখন এক আততায়ী অবিচারে গুলি চালাচ্ছিল, তখন সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা আহমেদ আল আহমেদ পিছন থেকে তাকে জাপটে ধরেন এবং বন্দুক কেড়ে নেন। যদিও এই ধস্তাধস্তির সময় দুটি গুলি লাগে তাঁর বুকে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে।

আহমেদের বীরত্ব: ভাই মুস্তাফা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, আহমেদ সিডনিতে একটি ফলের দোকান চালান এবং দুই সন্তানের বাবা। মুস্তাফা বলেন, “আমাদের আশা তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। তিনি একজন সত্যিকারের নায়ক।” যদিও নিউসাউথ ওয়েলস পুলিশ এখনও আহমেদের পরিচয় নিশ্চিত করেনি এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে।

আহমেদের এই অবিশ্বাস্য সাহসিকতার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানেজ, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর বীরত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

নিউসাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিশ মিনস বলেন, “প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এক বন্দুকবাজের দিকে একাই নিস্তব্ধে এগিয়ে যান এক ব্যক্তি। ইহুদিদের উপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল আততায়ী। সে সব তোয়াক্কা না-করেই বহু মানুষের প্রাণ বাঁচান ওই ব্যক্তি। তিনি একজন সত্যিকারের নায়ক।”

এদিকে, পুলিশের গুলিতে একজন বন্দুকবাজের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্যজন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। কোনো সংগঠন নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে এই হামলা চালিয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।