আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগের দুই সংশোধনী বিলে সম্মতি দিলেন না রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় বড় রদবদল আপাতত স্থগিত

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য (Chancellor) পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা আপাতত ভেস্তে গেল। পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, ২০২২ এবং আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) বিল, ২০২২— এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী বিলে সম্মতি দিলেন না রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এই বিলগুলিতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন না পাওয়ায় রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় প্রস্তাবিত বড় ধরনের পরিবর্তন আপাতত কার্যকর হচ্ছে না।

বিলগুলিতে কী ছিল প্রস্তাব? রাজ্য মন্ত্রিসভার সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিধানসভায় এই সংশোধনী বিলগুলি পাশ হয়েছিল।

পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, ২০২২: এই বিলের মাধ্যমে রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর প্রস্তাব ছিল।

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) বিল, ২০২২: এই বিলে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আমির-ই-জামিয়া (চ্যান্সেলর) পদেও রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগের প্রস্তাব ছিল।

রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, তৎকালীন রাজ্যপাল গত ২০ এপ্রিল ২০২৪ তারিখেই এই দুই বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষিত রেখেছিলেন।

রাষ্ট্রপতি কেন সম্মতি দিলেন না? রাজভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মূল আইনে স্পষ্টভাবে বলা রয়েছে যে, ‘রাজ্যপাল তাঁর পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন।’ এই মূল আইনটির প্রেক্ষিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি উক্ত দুই সংশোধনী বিলে সম্মতি প্রদান থেকে বিরত থাকলেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্যের পদ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে যে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব চলছিল, রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্তের ফলে সেই বিতর্কের আপাতত অবসান হলো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির চ্যান্সেলর পদে কোনও পরিবর্তন আপাতত হচ্ছে না এবং রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসাবে রাজ্যপালই বহাল থাকছেন।