ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর নাম? কেন এনুমারেশন ফর্ম জমা দিলেন না মমতা, কী বলছে নির্বাচন কমিশন?

রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য চলা ‘এসআইআর’ (SIR) প্রক্রিয়ায় এনুমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এখনও সেই ফর্ম জমা দেননি। কৃষ্ণনগরের সভা থেকে তিনি নিজেই এই কথা জানিয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মুখ্যমন্ত্রী সভায় তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, “আমি এখনও ফর্ম ফিলআপ করিনি। কেন করিনি? তিনবার সেন্ট্রাল মিনিস্টার ছিলাম। সাতবার এমপি হয়েছি। তিনবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি। আজ আমাকে প্রমাণ করতে হবে আমি নাগরিক?” এরপরই তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “এর চেয়ে নাকখত দেওয়া অনেক ভালো!”

বিজেপি-কমিশনকে তীব্র আক্রমণ

ফর্ম জমা না দেওয়ার কারণ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের উপর তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “ওই দাঙ্গাবাজদের কাছে আমি প্রমাণ দেব না যে আমি দেশের নাগরিক। দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় তো তোমরা কোথায় ছিলে?”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আজ রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি, ক্ষুদিরাম, সবাইকে অসম্মান করা হচ্ছে। এ কেমন ভারত?”

SIR প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে না থাকলেও, মুখ্যমন্ত্রী পুরো প্রক্রিয়া এত কম সময়ে তাড়াহুড়ো করে শেষ করার চেষ্টার বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, “আমরা বলেছিলাম সময় নিয়ে করো। এত তাড়াহুড়ো কেন? হোয়াই সো হারি?” মুখ্যমন্ত্রী এই তাড়াহুড়োর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকেই দায়ী করেন—”ভোটের জন্য বাংলায় জোর করে দখলদারি করতে চাইছে। কিন্তু আমরা থাকতে সেটা হতে দেব না।”

মুখ্যমন্ত্রীর নাম কি বাদ যাবে? কমিশন কী বলছে?

তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনুমারেশন ফর্ম জমা না দেওয়ায় কি কোনও বিশেষ জটিলতা তৈরি হতে পারে? ভোটার তালিকা থেকে কি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নাম বাদ যেতে পারে?

এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, রাজ্যের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি, যেমন রাজনৈতিক নেতা, বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত মানুষ, খেলোয়াড়, শিল্পী বা অন্য কোনও পরিচিত ব্যক্তিত্ব—এঁদের ক্ষেত্রে প্রথম পর্বে ফর্ম জমা না দিলেও সমস্যা নেই। তাঁরা দ্বিতীয় পর্বে নথি জমা দিলেই চলবে।