বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আল কায়েদা যোগ? এবার বাংলায় তল্লাশি শুরু NIA-র

জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA) আল-কায়েদার কথিত ‘গুজরাত সন্ত্রাস মডেল’-এর শিকড় সন্ধানে পশ্চিমবঙ্গ সহ পাঁচটি রাজ্যে ব্যাপক চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছে। বুধবার ত্রিপুরা, মেঘালয়, হরিয়ানা, গুজরাত এবং বাংলার মোট ১০টি স্থানে একযোগে হানা দেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাদের প্রাথমিক অনুমান, এই জঙ্গি মডেলে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের।
অনুপ্রবেশকারী যোগ ও অর্থ সংগ্রহের দায়িত্ব:
নির্দিষ্ট সন্দেহভাজনদের গোপন আস্তানা সম্পর্কে খবর পেয়েই এই তল্লাশি চালানো হয়। এনআইএ তল্লাশি চালিয়ে একাধিক ডিজিটাল ডিভাইস এবং নথি উদ্ধার করেছে, যা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত তদন্তে এনআইএ জানতে পেরেছে, মহম্মদ সজীবমিঞা, মুন্না খালিদ আনসারি ওরফে মুন্না খান, আজারুল ইসলাম ওরফে জাহাঙ্গির ওরফে আকাশ খান, এবং আদুল লতিফ ওরফে মোমিনকুল আনসারি – এই চারজন ভুয়ো পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বেআইনিভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল। এরা প্রত্যেকেই আল-কায়েদা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশে আল-কায়েদা অপারেশন ও প্ল্যানিংয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা এবং মুসলিম যুবকদের মগজ ধোলাইয়ের কাজ এদের মূল দায়িত্ব ছিল।
এই চার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে ১০ নভেম্বর ২০২৩ সালে আহমেদাবাদের NIA স্পেশাল কোর্টে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল এবং সেই মামলার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কের শিকড় উপড়ে ফেলা এবং তাদের যোগাযোগসূত্র (লিঙ্ক) খুঁজে বের করাই বর্তমান তল্লাশির প্রধান উদ্দেশ্য।
মুর্শিদাবাদে শোরগোল ও রাজনৈতিক চাপানউতোর:
বুধবার গোয়েন্দাদের একটি দল বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার নবগ্রামের নিমগ্রাম এলাকায় তল্লাশি চালায়। দিল্লিতে সাম্প্রতিক নাশকতার আবহে মুর্শিদাবাদের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় এনআইএ-র এই অভিযান নিয়ে শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে।
অতীতে বহুবার বিজেপি বাংলাকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের সেফ হেভেন’ বলে কটাক্ষ করেছে এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে থাকতে না দেওয়ার শপথ নিয়েছেন। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে প্রবেশের জন্য দায়ী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই।