মতুয়াদের ‘আমরণ অনশন’-এ নাটকীয় মোড়, মঞ্চে বসলেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর

গত ৫ নভেম্বর থেকে প্রয়াত বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের মন্দিরের সামনে নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন মতুয়া গোঁসাই ও দলপতিরা। এই আন্দোলন শুরুর দিনই অনশনকারীদের ‘বাংলাদেশি মুসলমান’ এবং ‘রোহিঙ্গা’ বলে কটাক্ষ করেন শান্তনু ঠাকুর। এই মন্তব্যের জেরে শান্তনু এবং মমতাবালা ঠাকুরের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়।

সংগঠনের কাজে মধ্যপ্রদেশে থাকার কারণে শুরুতে মঞ্চে যোগ দিতে না পারলেও, পূর্ব ঘোষণা মতো বুধবার থেকে সেই অনশনে যোগ দিলেন মমতাবালা ঠাকুর। তিনি মঞ্চে আসায় অনশনকারীরা উৎসাহিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সাংসদ নিজে জানিয়েছেন, অনশনে যোগ দেওয়ার দিন থেকে তিনি তাঁর সমস্ত রাজনৈতিক কাজ কর্ম বন্ধ রেখেছেন।

 

🗣️ মমতাবালা ঠাকুরের বক্তব্য

 

আমরণ অনশনে যোগ দিয়ে মমতাবালা ঠাকুর বলেন, “আমার কাছে মতুয়ারা সবার আগে। মতুয়ারা আছে বলেই আমি আছি। CAA চালু হওয়ায় মতুয়াদের নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।”

তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, মতুয়াদের স্বার্থেই CAA-এর বিরোধিতা এবং নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে তিনি এই আমরণ অনশন শুরু করলেন। তিনি জানান, “আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক ভাবে বিরোধিতা করছেন। আর আমরা ঠাকুর বাড়িতে ধর্মীয় ভাবে প্রতিবাদ করছি।”

 

💔 অনশনকারীদের পরিস্থিতি ও তৃণমূলের ভূমিকা

 

অনশনের আট দিনের মধ্যে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন অংশগ্রহণকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মতুয়াদের এই অনশন মঞ্চে বাম এবং কংগ্রেসের নেতারা এলেও, এখনও পর্যন্ত বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের কোনও নেতা-কর্মীকে ঠাকুরবাড়িতে আসতে দেখা যায়নি বলে খবর।

অনশনে অংশগ্রহণকারী কৃষ্ণপদ মণ্ডল জানান, “মা (মমতাবালা) আমাদের পাশে আছেন। ফলে সন্তানরা তো উৎসাহিত হবেই। আমরা আগের থেকে শক্তি পাচ্ছি। নিঃশর্ত নাগরিকত্ব না দিলে আমরা মৃত্যু পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালাব।”

মমতাবালা ঠাকুর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে এবং প্রয়াত স্বামী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর ও বড় মায়ের মন্দিরে প্রণাম সেরে মঞ্চে উঠে মতুয়াদের সঙ্গে অনশনে যোগ দেন।