যে ৭ লক্ষণে বুঝবেন গাড়ির ব্যাটারি নষ্ট হতে যাচ্ছে, জেনেনিন কী কী?

গাড়ির ইঞ্জিন যতই শক্তিশালী বা দামি হোক না কেন, গাড়ির ব্যাটারিকে প্রায়শই আমরা অবহেলা করে থাকি। কিন্তু সত্যিটা হলো, একটি দুর্বল ব্যাটারি আপনার গাড়ির পথচলা এক মুহূর্তেই থামিয়ে দিতে পারে। বেশিরভাগ চালকই ব্যাটারি পুরোপুরি নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত বিপদ টের পান না।

আসলে, গাড়ির ব্যাটারি খারাপ হওয়ার আগে বেশ কিছু স্পষ্ট সংকেত দেয়। এই ৭টি লক্ষণ ঠিকমতো লক্ষ্য করলেই বড় ঝামেলা এড়ানো সম্ভব।

১. স্টার্ট নিতে দেরি হওয়া বা ‘ঘর-ঘর’ শব্দ:
ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়ার জন্য চাবি ঘোরানোর পর যদি গাড়িটি ‘ঘর-ঘর’ শব্দ করে কিন্তু স্টার্ট নিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় নেয়, তবে এটি প্রথম সতর্কবার্তা। দুর্বল ব্যাটারি পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে না, ফলে ইঞ্জিনের ক্র্যাঙ্ক সঠিকভাবে ঘুরতে পারে না। এমনটা নিয়মিত হলে ব্যাটারি পরীক্ষা করানো উচিত।

২. হেডলাইট ও ইলেকট্রনিক্সের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া:
রাতে গাড়ি চালানোর সময় যদি হেডলাইটের আলো কম উজ্জ্বল মনে হয়, কিংবা ইনফোটেইনমেন্ট স্ক্রিন বা পাওয়ার উইন্ডো (কাঁচ) ওঠানামা করতে ধীরে কাজ করে, তবে বুঝতে হবে ব্যাটারি দুর্বল হচ্ছে। ব্যাটারি পর্যাপ্ত ভোল্টেজ দিতে না পারলেই ইলেকট্রনিক অংশগুলো এমন ইঙ্গিত দিতে শুরু করে।

৩. ব্যাটারির বয়স ২-৩ বছর ছাড়িয়েছে:
গাড়ির ব্যাটারি সাধারণত ২ থেকে ৪ বছর পর্যন্ত ভালো পারফর্ম করে। এরপর এর কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। বাইরে থেকে সব ঠিকঠাক দেখালেও ভেতরের সেলগুলি দুর্বল হতে পারে। তাই আপনার ব্যাটারির বয়স তিন বছর পেরোলেই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো বুদ্ধিমানের কাজ।

৪. টার্মিনালে জং বা সাদা/নীলচে দাগ:
ব্যাটারির পজিটিভ ও নেগেটিভ টার্মিনালের ওপর যদি সাদা বা নীলচে ক্রিস্টালের মতো দাগ বা গুঁড়ো দেখা যায়, তবে সেটা জংয়ের চিহ্ন। এই জং বিদ্যুৎ প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে ব্যাটারি চার্জ ধরে রাখতে পারে না। নিয়মিত এই জং পরিষ্কার না করলে ব্যাটারি দ্রুত অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

৫. ইঞ্জিন বন্ধ করার পরও ব্যাটারি ড্রেন হওয়া:
রাতের বেলা ইঞ্জিন বন্ধ করার পরও সকালে স্টার্ট নিতে সমস্যা হচ্ছে? এর মানে হলো, হয় কোথাও কারেন্ট লিক হচ্ছে (Parastic Drain), নয়তো ব্যাটারি চার্জ ধরে রাখতে পারছে না। ইন্টারনাল সেল ফেইল বা তার সংযোগে সমস্যা থেকেও এমনটা হতে পারে।

৬. গাড়ি বন্ধ অবস্থায় দ্রুত চার্জ শেষ:
ইঞ্জিন বন্ধ রেখে রেডিও, এসি বা হেডলাইট সামান্য কিছুক্ষণের জন্য চালানোর পরই যদি ব্যাটারি দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে বুঝতে হবে ব্যাটারি তার আগের শক্তি হারিয়েছে। একটি সুস্থ ব্যাটারি ইঞ্জিন বন্ধ থাকলেও এই ধরনের অ্যাকসেসরিজগুলোকে কিছু সময়ের জন্য সাপোর্ট দিতে পারে।

৭. অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ বা ব্যাটারি ফুলে ওঠা:
যদি কখনো ব্যাটারি অতিরিক্ত চার্জ হওয়ার কারণে বা ইন্টারনাল ক্ষতির জন্য ফুলে ওঠে অথবা গ্যাসের মতো ঝাঁঝালো দুর্গন্ধ ছড়ায়, তবে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক সংকেত। এমন অবস্থায় ব্যাটারি ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ, এমনকি ছোটখাটো বিস্ফোরণও ঘটতে পারে। দেরি না করে অবিলম্বে ব্যাটারি পরিবর্তন করা উচিত।