বিহার ভোটের দামামা বাজতেই ‘৪০ দিনের কড়া আইন’! আজ থেকেই রাজ্যে যা যা করা নিষিদ্ধ, জানুন এক নজরে!

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। মোট ২৪৩টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে দু’দফায়— ৬ নভেম্বর এবং ১১ নভেম্বর, এবং ফল প্রকাশ হবে ১৪ নভেম্বর। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যজুড়ে নির্বাচনী আচরণবিধি (Model Code of Conduct) অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে। এই বিধি, যা প্রায় ৪০ দিন বহাল থাকবে, তার প্রধান লক্ষ্য হল ভোট প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং প্রভাবমুক্ত রাখা।

আচরণবিধিতে যা যা নিষিদ্ধ:

নির্বাচন চলাকালীন ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনও কাজ করা যাবে না। কেবল রাজনৈতিক নেতা বা প্রার্থী নন, সাধারণ নাগরিকরাও এই নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। লঙ্ঘন করলে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারে, এমনকি আটকও করা হতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বিধিনিষেধগুলি হল:

উদ্বোধন ও অনুমোদন: কোনও রকম উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন নিষিদ্ধ। নতুন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া যাবে না।

প্রচার ও বিজ্ঞাপন: সরকারের সাফল্য তুলে ধরা হোর্ডিং, ব্যানার বা বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট, টিভি বা ডিজিটাল মিডিয়ায়) দেওয়া যাবে না।

সরকারি সুবিধা: মন্ত্রী বা সরকারি আধিকারিকদের সরকারি সফর নির্বাচনী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। সরকারি গাড়িতে সাইরেন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

সরকারি সম্পত্তি: সরকারি ভবন বা সম্পত্তিতে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা রাজনৈতিক নেতাদের ছবি প্রদর্শন করা যাবে না।

অর্থ ও প্রলোভন: কোনও প্রকার ঘুষ, উপঢৌকন বা প্রলোভন দেওয়া বা নেওয়া যাবে না। ভোটের সময় ভোটারদের মধ্যে মদ বিতরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

নতুন ঘোষণা: নির্বাচনের ঘোষণা হওয়ার পর থেকে কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা কোনও নতুন ঘোষণা, প্রকল্প উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবেন না। সরকারি নিয়োগ বা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া: সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার সময় বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে, একটি পোস্টও আইন লঙ্ঘনের আওতায় আসতে পারে।

শাস্তিযোগ্য অপরাধ:

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে। বিশেষভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে:

জাতি, ধর্ম বা ভাষাভিত্তিক বিভেদ উস্কে দেওয়া বা ঘৃণা ছড়ানো।

ভোটারদের ঘুষ বা ভয় দেখিয়ে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করা—যা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত মন্তব্য বা চরিত্রহননমূলক বক্তব্য দেওয়া।

ভোটের আগের দিন কোনও জনসভা করা নিষিদ্ধ এবং ভোটের দিনে ভোটকেন্দ্র থেকে ১০০ মিটার ব্যাসার্ধে প্রচার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে।

নির্বাচন কমিশন প্রতিটি এলাকায় বিশেষ পর্যবেক্ষক (Observer) নিয়োগ করবে, যাঁরা এই বিধি লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করবেন। র‍্যালি, মিছিল বা সভা করার আগে নির্বাচন কমিশনের এবং নিকটবর্তী থানার অনুমতি নিতে হবে। কমিশনের মূল বার্তা একটাই: “স্বচ্ছ, ন্যায়সংগত ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা।”