ভারতের হানায় ভেঙেছিল মেরুদণ্ড! এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সারাই করতে চুপিসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য নিল পাকিস্তান

ভারতের হাতে দুরমুশ হওয়ার পরেও পাকিস্তান (Pakistan) মুখে যতই ‘ফাঁপা হুঁশিয়ারি’ দিক, অভ্যন্তরে কিন্তু ‘অপারেশন সিঁদুর প্রত্যাঘাত’-এর ধাক্কা এখনও সামাল দিতে পারেনি তারা। ভারতের সেই অভিযানের পর পাকিস্তানের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এতটাই বেশি হয় যে, শেষমেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (USA) সাহায্য নিতে বাধ্য হন শাহবাজ শরিফেরা।

সিএনএন নিউজ ১৮-এর (CNN News 18) একটি বিস্ফোরক রিপোর্ট অনুসারে, নিজেদের সামরিক বিমান ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মেরামত করতে ৪০০ থেকে ৪৭০ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৩,৯০০ কোটি টাকা) জরুরি তহবিল অনুমোদন করতে হয়েছে পাকিস্তানকে।

কী হয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’ হানায়?
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত পাক অধিকৃত কাশ্মীর নয়, বরং পাকিস্তানের একাধিক সক্রিয় জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। পাশাপাশি, ভারত দাবি করে, পাকিস্তানের একাধিক সামরিক ঘাঁটিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

ভারতীয় বায়ুসেনা প্রধান এয়ার মার্শাল এপি সিং সম্প্রতি এই অভিযানের ভয়াবহতা তুলে ধরে জানান, ভারত কমপক্ষে:

৫টি হাই-টেক ফাইটার জেট (সম্ভবত এফ-১৬) এবং ১টি এয়ারবোর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম (AWACS) গুলি করে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছিল, যা পাক ভূখণ্ডের ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে আঘাত হেনেছিল।

৪টি রাডার, ২টি কমান্ড সেন্টার, ১টি হ্যাঙ্গার এবং ১টি সি-১৩০ ক্লাস ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফটও ধ্বংস করা হয়েছিল।

এয়ার মার্শাল সিং জোর দিয়ে বলেন, ভারতের দীর্ঘ-পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল এবং তিনটি সামরিক বাহিনীর (সেনা, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী) সম্পদের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ এই যুদ্ধকে ভারতের পক্ষে ঘুরিয়ে দিয়েছে।

কেন আমেরিকার দ্বারস্থ হলো ইসলামাবাদ?
সিএনএন নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল পাক বিমান বাহিনীর ভোলারি বিমান ঘাঁটিতে। সেখানে রাখা একাধিক সামরিক বিমান গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পাকিস্তানের সাব ২০০০ এরিএ এডব্লিউএসিএস (SAAB 2000 Erieye AWACS)

একটি লকহিড সি-১৩০ (Lockheed C-130) পরিবহন বিমান

কমপক্ষে ৪টি এফ-১৬ (F-16) যুদ্ধবিমান

প্রতিবেদন দাবি করছে, ভোলারি বিমান ঘাঁটির ক্ষতিগ্রস্ত এফ-১৬ এবং অন্যান্য বিমানগুলি আকাশে ওড়ার মতো অবস্থায় ছিল না। এই বিপুল ক্ষতি সামাল দিতেই পাকিস্তানি সেনাপ্রধান আসিম মুনির নাকি সেই সময়কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গোপনে সাহায্য চেয়েছিলেন।

চিনের বাধা, পাক বিমান ঘাঁটিতে নামল মার্কিন সেনা
রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের চিরন্তন বন্ধু চিন (China) এই মেরামতির কাজে অংশ নিতে চাইলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাতে বাধা দেয়। এরপরই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের দোহার আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি, আবুধাবির আল ধফরা এবং মেরিল্যান্ডের বেথেসডা থেকে বিশেষ কারিগরদের দল পাঠায় পাকিস্তানের ভোলারি বিমান ঘাঁটিতে।

মার্কিন বায়ুসেনার কর্মীরা এসে ক্ষতিগ্রস্ত বিমান, বিশেষ করে এরিএ বিমানটি সারাই করেন। তবে, গত কয়েক মাস ধরে চলা এই কাজের ফলে বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষয়ক্ষতি মেরামত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

অর্থাৎ, ভারতের প্রত্যাঘাতের ধাক্কা এতটাই মারাত্মক ছিল যে, মুখে অস্বীকার করলেও পাকিস্তানকে বাধ্য হয়েই তার সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক সহযোগী, আমেরিকার কাছে মাথা নত করতে হলো।