যৌথ উদ্যোগে ইতি! নবান্ন আনছে ‘এগজিট পলিসি’, ৪০০০ কোটি টাকা তুলে নিজেদের হাতে মধ্যবিত্তের আবাসন প্রকল্প

দু’দশক আগে মধ্যবিত্তের মাথায় ছাদ তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে বেসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে শুরু হওয়া আবাসন প্রকল্পগুলি থেকে এবার নিজেদের অংশীদারিত্ব সরিয়ে নেওয়ার পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। নবান্ন আনতে চলেছে ‘এগজিট পলিসি’ (Exit Policy)—যার মাধ্যমে আবাসন শিল্পে রাজ্যের স্বনির্ভরতার নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, হাউজিং বোর্ডের সঙ্গে বেঙ্গল পিয়ারলেস, বেঙ্গল অম্বুজা, বেঙ্গল ইমামি-সহ মোট ১৯টি যৌথ উদ্যোগ ও অ্যাসিস্টেড সেক্টর কোম্পানিতে থাকা রাজ্যের অংশীদারিত্ব (যৌথ উদ্যোগে ৪৯.৫ শতাংশ এবং অ্যাসিস্টেড সেক্টরে ১১ শতাংশ) এবার বেসরকারি অংশীদারদের কাছে পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর করা হবে।

রাজ্য কোষাগারে আসছে বিপুল অর্থ
এই অংশীদারিত্ব হস্তান্তরের মাধ্যমে রাজ্যের কোষাগারে আসতে পারে বিপুল পরিমাণ অর্থ। অনুমান করা হচ্ছে, এই ‘এগজিট পলিসি’ থেকে প্রতিটি সংস্থা থেকে ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত পাওয়া যেতে পারে। সব মিলিয়ে নবান্ন প্রায় চার হাজার কোটি টাকার বিশাল রাজস্ব ঘরে তুলতে পারে।

সেই অর্থে গড়ে উঠবে নতুন উপনগরী
উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই বিপুল অর্থের একটি বড় অংশ সরকার ব্যবহার করবে সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে মধ্যবিত্তের জন্য নতুন উপনগরী গড়ে তোলার কাজে। হাউজিং বোর্ডের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও নিজেদের পরিকাঠামো ব্যবহার করে দ্রুত এই প্রকল্পগুলি হাতে নেওয়া হবে।

নতুন এই উপনগরীগুলি কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে—যেমন নিউটাউন, সোনারপুর, বরাহনগর, হাওড়া ও বর্ধমান সংলগ্ন এলাকায় ধাপে ধাপে গড়ে উঠবে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে করুণাময়ী, লাবণী, শকুন্তলা পার্ক ও গল্ফগ্রিনের আদলে একাধিক আধুনিক উপনগরী তৈরি হবে, যা সম্পূর্ণরূপে রাজ্যের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে থাকবে।

নবান্নের এক কর্তা এই নীতিকে “ভবিষ্যতের জন্য নীতি নির্ধারক পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করে বলেন, এতে রাজ্য সরকার আর্থিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে বাড়ি কেনা আরও সহজলভ্য হবে। অর্থাৎ, দীর্ঘদিনের যৌথ উদ্যোগ মডেলকে বিদায় জানিয়ে, রাজ্য সরকার এবার মধ্যবিত্তের স্বপ্নের দায়িত্ব সম্পূর্ণ নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে।

Editor001
  • Editor001