নোয়াখালির সেই ভয়াল দিন! কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনে ইতিহাসের বলি হওয়ার বার্তা দিয়ে বিতর্ক উসকে দিলেন তথাগত রায়

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনটিতে ১৯৪৬ সালের নোয়াখালি গণহত্যার ভয়াবহ স্মৃতিচারণ করে বিতর্ক উসকে দিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। সোমবার ‘এক্স’ বার্তার মাধ্যমে তিনি এই ঐতিহাসিক ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

তাঁর বার্তার শুরুতেই স্পেনীয় দার্শনিক সান্তায়ানার উক্তি উল্লেখ করে তিনি লেখেন:

“ইতিহাস যারা ভুলে যায় তাদের কপালে আছে আবার সেই ইতিহাসের বলি হওয়া।”

প্রাক্তন রাজ্যপাল জানান, ১৯৪৬ সালে এই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনেই মুসলিম লীগের নরপিশাচ গোলাম সারোয়ারের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ভারতের প্রাক্তন নোয়াখালি জেলা ও সংলগ্ন চাঁদপুর মহকুমায় (বর্তমান বাংলাদেশের নোয়াখালি, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলা) হিন্দুদের উপর অমানুষিক অত্যাচার চালানো হয়েছিল। এই অত্যাচারের প্রধান রূপ ছিল হত্যা, ধর্ষণ, বলপূর্বক ধর্মান্তরকরণ এবং সম্পত্তি নষ্ট করা।

ভয়াবহ অত্যাচারের বর্ণনা ও গান্ধী প্রসঙ্গ
তথাগত রায় তাঁর পোস্টে সেই সময়ের অত্যাচারের ভয়াবহতার কিছু উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি লেখেন, হিন্দু মহাসভার নেতা রাজেন্দ্রলাল রায়চৌধুরীর কাটা মুণ্ডু একটি ডেকচিতে করে সারোয়ারের চ্যালারা উপহার দিয়েছিল।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মোহনদাস গান্ধীকেও আক্রমণ করে বসেন। তাঁর দাবি:

“মোহনদাস গান্ধী এই সময় নোয়াখালি পরিভ্রমণ করে খুব নাম কিনেছিল, কিন্তু মুসলমান হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি।”

তিনি আরও জানান, সেই সময় হত্যাকারীদের একটি প্রচলিত পদ্ধতি ছিল—কোনো হিন্দু গৃহস্থের একমাত্র গরুটিকে কেটে সেই মাংস গৃহস্থকে জোর করে খাওয়ানো। হিন্দুদের এই বিশ্বাস ছিল যে একবার গরুর মাংস মুখে দিলে আর হিন্দুসমাজে ফিরে আসা সম্ভব নয়। যদিও রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী মাধবানন্দ ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়—এই দু’জনে মিলে পরে তাঁদের হিন্দুসমাজে ফিরে আসার ব্যবস্থা করেছিলেন।

তথাগত রায় দীনেশচন্দ্র সিংহের ‘নোয়াখালির মাটি ও মানুষ,’ অশোকা গুপ্তের ‘নোয়াখালির দুর্যোগের দিনে’ এবং তাঁর নিজের লেখা ‘যা ছিল আমার দেশ’ বইতে এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।