ডিএ-র বকেয়া মেটানোর আগে নতুন পে কমিশন নয়! মমতার সরকারের উপর চরম চাপ বাড়ালেন সরকারি কর্মীরা

কেন্দ্রীয় সরকার অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) গঠনের ঘোষণা করার পরই কেন্দ্র সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। ঠিক এই আবহেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA) এবং সপ্তম বেতন কমিশন (West Bengal 7th Pay Commission) নিয়ে জোরদার বিতর্ক শুরু হয়েছে।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের দাবি, এখনও পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় থাকা প্রায় ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই পরিস্থিতিতে নতুন বেতন কমিশন চালু করা কার্যত অসম্ভব।
ডিএ মামলা ও সপ্তম বেতন কমিশন নিয়ে দোটানা
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বিশেষ বেঞ্চে। যদিও রায় এখনও প্রকাশ হয়নি, কিন্তু এর মধ্যেই সপ্তম বেতন কমিশন পিছিয়ে পড়ার জল্পনা তীব্র হচ্ছে।
কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় একটি ভিডিও বার্তায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা এবং নতুন বেতন কমিশন নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন:
“কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা যেখানে সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে মোট ৫৮ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অধীনে মাত্র ১৮ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন। অর্থাৎ, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-র ফারাক এখনও ৪০ শতাংশ।”
তাঁর স্পষ্ট দাবি, যতক্ষণ না এই পাহাড় প্রমাণ বকেয়া মেটানো হচ্ছে, রাজ্যে নতুন কোনও বেতন কমিশন চালু করা সম্ভব নয়।
২০২৬ সালের লক্ষ্য ও সরকারি কর্মীদের হুঁশিয়ারি
যদিও সরকারি কর্মচারীদের তরফে আগামী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন বেতন কমিশন (সপ্তম বেতন কমিশন) কার্যকর করার দাবি উঠেছে, যার মূলে রয়েছে কেন্দ্র-রাজ্যের ডিএ-র এই বিশাল ফারাক।
এদিকে, পঞ্চম বেতন কমিশনের ডিএ মামলা নিয়ে চলতি মাসেই আদালতের রায় প্রকাশ হবে বলে আশাবাদী সরকারি কর্মীরা। চূড়ান্ত হুঁশিয়ারির সুরে তাঁরা জানিয়েছেন, যদি আদালতের রায় তাঁদের পক্ষে আসে, তবে সেই বকেয়া ডিএ কীভাবে আদায় করতে হয়, তা কর্মচারী সমাজ খুব ভালোভাবেই জানে।
সব মিলিয়ে, এই আইনি লড়াইয়ের ফলাফলই যে পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন পে কমিশন চালুর আগে ডিএ নিয়ে আদালতের রায় কী হয়, সেদিকেই এখন নজর সবার।