ফ্রান্সের রাজনীতিতে চরম অনিশ্চয়তা, মাত্র ২৭ দিনে পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকরনু

ফ্রান্সে রাজনৈতিক অচলাবস্থা আরও গভীর হলো। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকরনু-র পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। সোমবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। মাত্র গত মাসেই লেকরনুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন ম্যাক্রোঁ, কিন্তু তাঁর এই স্বল্পকালীন মেয়াদ ইউরোপের এই দেশটিতে এক গভীর রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি করল।
সমালোচনার মুখে অপরিবর্তিত মন্ত্রিসভা
৩৯ বছর বয়সী লেকরনু-র পতন হলো তাঁর মন্ত্রিপরিষদ গঠন নিয়ে সমালোচনার কারণে। গত রবিবার তিনি যে মন্ত্রিসভার তালিকা ঘোষণা করেন, তা ছিল প্রায় অপরিবর্তিত। এই মন্ত্রিসভায় তাঁর পূর্বসূরি ফ্রাঁসোয়া বাইরুকে সহ পরিচিত মুখদের স্থান দেওয়া হয়, যা রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।
ডানপন্থী মিত্ররা তাঁর সরকার থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়ার পরপরই ম্যাক্রোঁর এই ঘনিষ্ঠ বন্ধু সোমবার সকালে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
লেকরনুর ৩টি দুর্ভাগ্যজনক রেকর্ড
পদত্যাগের পর লেকরনু ফ্রান্সের ইতিহাসে তিনটি দুর্ভাগ্যজনক রেকর্ড গড়েছেন:
১. স্বল্পতম সময়ের প্রধানমন্ত্রী: তিনি মাত্র ২৭ দিনের জন্য এই পদে ছিলেন।
২. দীর্ঘতম সরকারবিহীন সময়: ফ্রান্স সরকারবিহীন অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ২৬ দিন কাটায়।
৩. নীতি বিবৃতি না দেওয়া: তিনিই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি কোনও সাধারণ নীতি বিবৃতি দেননি।
নেতৃত্ব সংকট নিয়ে বিতর্ক
একসময় রক্ষণশীল উদীয়মান তারকা হিসেবে পরিচিত লেকরনু ২০১৭ সালের ম্যাক্রোঁর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে সমর্থন করেছিলেন এবং রাষ্ট্রপতির কেন্দ্রবাদী আন্দোলনে যোগ দেন। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০৩০ সাল পর্যন্ত একটি বড় সামরিক সম্প্রসারণ পরিকল্পনার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু বিতর্কিত ২০২৬ সালের বাজেট পরিকল্পনা নিয়ে তাঁর সরকার আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর লেকরনুর পদত্যাগ এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল। লেকরনু ছিলেন এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ম্যাক্রোঁর চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী, যা ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।