‘শর্ট সার্কিটের কথা বলেছিলাম, কেউ শোনেনি’, জয়পুরে ট্রমা সেন্টারে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাড়হিম করা অভিযোগ

জয়পুরের রাষ্ট্রীয় পরিচালিত সাওয়াই মান সিং (SMS) হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকালে ট্রমা সেন্টারের ভিতরে ভাঙা চশমা, ছাই, পুড়ে যাওয়া আইসিইউ কেন্দ্র এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চপ্পল সেই রাতের ভয়াবহতার সাক্ষী। এই ঘটনায় অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গেছে।
হাসপাতালের বাইরে রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের হাহাকার। এরই মাঝে উঠে আসছে এক হাড়হিম করা অভিযোগ।
তালা মেরে পালিয়ে গেলেন কর্মীরা?
নিহতদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, অগ্নিকাণ্ডের সময় হাসপাতালের কর্মীরা এবং চিকিৎসকরা আইসিইউ-এর গেটটি তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান!
নিহত পিন্টু গুজরের ভাই দশরথ গুজর দাবি করেছেন যে, তিনি ঘটনার আগে শর্ট সার্কিটের কথা হাসপাতাল প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কাতর আবেদনে কর্ণপাত না করে হাসপাতাল কর্মীরা বলেছিলেন, ‘কিছুই হবে না এবং এটি (শর্ট সার্কিট) ঠিক হয়ে যাবে।’ তাঁর অভিযোগ:
“কয়েক মিনিটের মধ্যেই ধোঁয়ায় ঘর ভরে যায় এবং কর্মীরা পালিয়ে যান। ফায়ার অ্যালার্ম বাজেনি। এমনকী অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রও খালি ছিল। এক ঘণ্টা পরে ফায়ার ব্রিগেড এসে আগুন নিভিয়ে দেয়, তারপরে আমরা পিছনের গেট দিয়ে প্রবেশ করি এবং বিছানার চাদরে জড়িয়ে রোগীদের বের করে আনি।”
পুলিশ কনস্টেবলের তৎপরতায় উদ্ধার
এদিকে, নিজের একটি পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে থাকা পুলিশ কনস্টেবল হরি মোহন সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে জানান, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে তিনি কাঁচ ভেঙে রোগীদের বিছানার চাদর দিয়ে বাইরে বের করে আনেন।
ট্রমা সেন্টারের ইনচার্জ ডা. অনুরাগ ধাকাড জানিয়েছেন, স্টোরেজ এলাকায় আগুন লাগার সময় নিউরো আইসিইউতে ১১ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। আগুন দেখেই হাসপাতাল জুড়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, ধোঁয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
অন্য একজন ওয়ার্ড বয় বিকাশ জানিয়েছেন যে, তিনি এবং অন্যান্য কর্মীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্তত তিন থেকে চারজন রোগীকে বাঁচাতে পেরেছিলেন।
দমকল কর্মীরা প্রায় দুই ঘন্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকাণ্ডে হাসপাতালের বিভিন্ন নথি, আইসিইউ সরঞ্জাম এবং রক্তের নমুনা টিউব পুড়ে গিয়েছে। এই গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ঘটনার সঠিক তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।