উত্তরবঙ্গে JCP-তে নদী পার! মাদারিহাট থেকে পর্যটকদের উদ্ধারে যুদ্ধকালীন তৎপরতা, চালু বিশেষ বাস

টানা বৃষ্টির দাপটে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টা ছিল ভয়াবহ। ধস, নদীর জলস্রোত আর রাস্তা ভাঙনে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছিল। তবে, সোমবার সকাল থেকে আবহাওয়ার ধীরে ধীরে উন্নতি হতে শুরু করতেই প্রশাসন জোরকদমে উদ্ধার কাজে নেমেছে। পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য শুরু হয়েছে যুদ্ধকালীন তৎপরতা।
হলং সেতু ভেঙেছে, JCP-ই ভরসা
রবিবার প্রবল জলস্রোতে আলিপুরদুয়ারের হলং সেতু ভেঙে পড়ার পর মাদারিহাট ট্যুরিস্ট লজে বহু পর্যটক আটকে পড়েন। রাস্তাঘাট বন্ধ এবং জলস্রোত প্রবল হওয়ায় পরিস্থিতি জটিল ছিল।
সোমবার সকাল থেকেই বন দপ্তর এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে উদ্ধার অভিযান। দুর্গম এলাকায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে জেসিবি (JCB)। এমনকি পর্যটকদের জেসিবিতে চাপিয়ে নদীর ওপার থেকে নিরাপদ এলাকায় নিয়ে আসা হয়েছে।
কলকাতা থেকে বেড়াতে এসে আটকে পড়া পর্যটক বিমল রায় ও তাঁর পরিবারকে সোমবার সকালেই উদ্ধার করা হয়। বিমলবাবু স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, “জেসিবির মাধ্যমে আমাদের উদ্ধার করা হয়েছে। এখন একটু স্বস্তি লাগছে।” তবে তাঁর অভিযোগ, “আমরা ২০-২৫ জন পর্যটক রবিবার সকাল থেকে লজে আটকে ছিলাম। সাহায্যের আবেদন করেও প্রথম দিকে কেউ আসেনি।”
বিশেষ বাস পরিষেবা ও বাড়তি টাকা না নেওয়ার নির্দেশ
পর্যটকদের নিরাপদে ফেরাতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (NBSTC)। রবিবার থেকেই চালু হয়েছে বিশেষ বাস পরিষেবা, যা আজও (সোমবার) অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া, রাজ্য সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে— যারা এখনও উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় আটকে রয়েছেন, তাঁদের যেন অতিরিক্ত থাকার জন্য কোনো বাড়তি টাকা না দিতে হয়। হোটেল ও পর্যটন সংগঠনগুলিকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। সর্বাধিক পর্যটক আটকে রয়েছেন মিরিক, কালিম্পং এবং ডুয়ার্সের বিভিন্ন জায়গায়।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। আপাতত ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে উত্তরবঙ্গ, তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।