গভীর রহস্যে রেলশহর, স্ত্রীর গলাকাটা দেহ মেলার পর এবার স্বামীর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার! আত্মহত্যা না অন্য কিছু?

চলতি বছরের এপ্রিলে স্ত্রী সঞ্চিতা চৌধুরীকে (৫৬) কুপিয়ে খুন করে বাড়ি লুট করে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ভয়াবহ ঘটনার ঠিক ৬ মাস পর এবার আসানসোলের চিত্তরঞ্জন রেলশহরের অপর একটি আবাসন থেকে উদ্ধার হলো রেলকর্মী প্রদীপ চৌধুরীর (৫৬) গুলিবিদ্ধ দেহ। রবিবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রেল কলোনিতে।

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, নিজেকে শেষ করেছেন প্রদীপ চৌধুরী।

দরজা ভেঙে উদ্ধার গুলিবিদ্ধ দেহ
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (কুলটি) জাভেদ হুসেইন। তিনি জানান, “আমরা যখন আসি, তখন দরজা বন্ধ ছিল। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখি প্রদীপ চৌধুরী বিছানায় পড়ে আছেন। তাঁর মাথার ডানদিকে কপালের কাছে একটি গুলি লেগেছে।”

প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে এসিপি বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে নিজেকে শেষ করেছেন প্রদীপ। ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও একটি গুলির খোলও উদ্ধার হয়েছে। বাকিটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

স্ত্রীর খুনের পর বদলেছিলেন আবাসন
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে রেল কলোনির ২৮ নম্বর স্ট্রিটের একটি আবাসন থেকে প্রদীপ চৌধুরীর স্ত্রী সঞ্চিতা চৌধুরীর গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই সময় প্রদীপ ডিউটিতে ছিলেন। স্ত্রীর খুনের ঘটনার তদন্তের জন্য তাঁকে একাধিকবার থানায় তলবও করা হয়েছিল।

স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রদীপ আবাসন বদল করে চিত্তরঞ্জন রেল শহরের নর্থ এলাকার ৬৪ নম্বর স্ট্রিটের নতুন ঠিকানায় এসে থাকতে শুরু করেন তাঁর ছেলে দেবদত্তকে নিয়ে।

রবিবার দুপুরে ছেলে দেবদত্ত বাইরে বেরিয়েছিলেন। রাত ৮টা নাগাদ তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে গুলিবিদ্ধ প্রদীপ চৌধুরীর দেহ উদ্ধার করে।

চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানার স্থানীয় শ্রমিক নেতা ইন্দ্রজিৎ সিং এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “গত ৩ এপ্রিল প্রদীপ চৌধুরীর স্ত্রীকে খুন করা হয়। এখনও পর্যন্ত তাঁর খুনির হদিশ পাওয়া যায়নি। আজকে কী হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত।” প্রদীপ চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রীর খুনের মামলার তদন্তে নতুন করে কী মোড় আসে, সেটাই এখন দেখার।