পুজোয় চিকিৎসার ‘পুজো অফার’! মৌলালির স্টুডেন্টস হেলথ হোমে সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ফ্রি ECG ও টেলি-পরামর্শ

শারদোৎসবের ঠিক আগে কলকাতা শহরের নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য দারুণ উদ্যোগ নিল মৌলালির স্টুডেন্টস হেলথ হোম (SHH)। আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত টানা বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে এই প্রখ্যাত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শুধু সাধারণ চিকিৎসাই নয়, এই সময়কালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ, সাধ্যমতো ওষুধ এবং প্রয়োজনে নিখরচায় ইসিজি (ECG)-এর ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
সংস্থা কর্তৃপক্ষ এটিকে ‘পুজো অফার’ বলতে নারাজ। বরং তারা মনে করেন, এটি তাদের কয়েক দশকের পুরনো ঐতিহ্য। নিজ সামর্থ্য মতো সাধারণ গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রথা মেনেই এই সিদ্ধান্ত।
কেন এই বিশেষ উদ্যোগ?
স্টুডেন্টস হেলথ হোমের সাধারণ সম্পাদক ড. পবিত্র গোস্বামী এই বিশেষ পরিষেবা চালুর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে প্রবল বৃষ্টির কারণে কলকাতা শহরের নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হন। রুটিরুজির টানে ঘর ছেড়ে বেরোনো বেশ কয়েকজন মানুষ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান।
ড. গোস্বামী বলেন, “অবস্থাপন্ন মানুষের পক্ষে এই আঘাত হয়তো সামলানো সম্ভব। কিন্তু নিম্নবিত্ত মানুষ অসহায় বোধ করছেন। এই প্রেক্ষাপটে স্টুডেন্টস হেলথ হোম তার ঐতিহ্য মেনে, নিজ সামর্থ্য মতো কলকাতাবাসীর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
কখন এবং কী পরিষেবা মিলবে?
এই বিশেষ পরিষেবা ২৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) থেকে আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে (OPD) পাওয়া যাবে।
পরিষেবা: নিখরচায় সাধারণ চিকিৎসা, বিনামূল্যে সাধ্যমতো ওষুধ, নিখরচায় ইসিজি।
বিশেষজ্ঞ পরামর্শ: চিকিৎসকের মুখোমুখি পরামর্শের পাশাপাশি টেলি-পরামর্শ পাওয়ার সুযোগও থাকছে।
অষ্টমী-দশমীতে পরিষেবা কেমন থাকবে?
যদিও অষ্টমী এবং দশমীর দিন (আগামী মঙ্গল ও বুধবার) পরিষেবায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটতে পারে। কারণ, এই দুই দিন বহু চিকিৎসক ছুটিতে থাকবেন। তবে, বাকি দিনগুলোতে কমিউনিটি মেডিসিনের ডাক্তার শতাব্দী মিত্র, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ কৃষ্ণেন্দু রায়, চাইল্ড ও ইএনটি বিভাগের ডাক্তার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের চিকিৎসক হিমালয়া দত্ত, ড. বিধান মহন্তী, ড. সঞ্জীব মিত্র, ড. ইন্দ্রানী দাস-সহ বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞরা রোগী দেখবেন।
ড. গোস্বামী বলেন, “এই সমস্ত চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা নিজের ইচ্ছায় সাধারণ মানুষের স্বার্থে উৎসবের দিনগুলোতে বিনামূল্যে পরিষেবা দিতে এগিয়ে এসেছেন। প্রায় প্রতি শারদোৎসবের সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সমস্যা হয়। আশা করি হোমের এই প্রয়াস আর্ত মানুষের উপকারে আসবে এবং প্রয়োজনে তাঁরা এই সুযোগ নেবেন।”