‘বেবি, I Love You’—হস্টেলের ছাত্রীকে মেসেজ! দিল্লির অভিজাত আশ্রমের সেই ‘গডম্যান’ অবশেষে পাকড়াও,

দীর্ঘ ৫০ দিন ধরে চলা লুকোচুরি শেষ। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন স্বঘোষিত ‘গডম্যান’ স্বামী চৈতন্যনন্দ সরস্বতী। দিল্লির অভিজাত এলাকা বসন্ত কুঞ্জের একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর পদে আসীন এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৭ জন ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। রবিবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ তাঁকে আগ্রার তাজ গঞ্জের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কে এই অভিযুক্ত ‘বাবা’?
অভিযুক্ত স্বামী চৈতন্যনন্দ সরস্বতী, যিনি স্বামী পার্থ সারথি নামেও পরিচিত, তিনি ছিলেন বসন্ত কুঞ্জের শ্রী সারদা ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্টের সর্বেসর্বা ডিরেক্টর। এটি এক প্রকারের আশ্রম-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, যেখানে ছাত্রীদের থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতার শীর্ষেই থেকেই তিনি একের পর এক ন্যাক্কারজনক কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ওঠা বিস্ফোরক অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে:
অশালীন ভাষায় ছাত্রীদের আপত্তিকর মেসেজ করা।
রাতবিরেতে নিজের ঘরে ডেকে পাঠানো।
জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা।
বিনা খরচে বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভন দেখানো।
কেন ছিলেন পলাতক?
জানা গিয়েছে, গত ৪ অগস্ট ভারতীয় বায়ু সেনাবাহিনীর সদর দফতর থেকে দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের ওই প্রতিষ্ঠানে তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ এসেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হতেই স্বামী চৈতন্যনন্দ সরস্বতী পলাতক হন। গ্রেফতারি এড়াতে তিনি ছদ্মবেশে ঘুরছিলেন। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে মোবাইল বা অন্য কোনও ইলেকট্রনিক গ্যাজেটও ব্যবহার করছিলেন না এই ‘বাবা’। ৫০ দিন ধরে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে থাকার পর অবশেষে রবিবার গভীর রাতে পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি।
‘বেবি’, ‘I love you’—মেসেজ করে কু-প্রস্তাব
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআরে এক ছাত্রী চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। তিনি জানান, সিঁড়ি থেকে পড়ে পায়ে চোট পাওয়ার পর স্বামী চৈতন্যনন্দ সরস্বতী তাঁর এক্স-রে রিপোর্ট দেখতে চান। এরপরই শুরু হয় অশালীন মেসেজ।
ছাত্রীর অভিযোগ, স্বাভাবিক সময়ের বাইরে অত্যন্ত অদ্ভুত সময়ে তাঁকে মেসেজ করা হত। মেসেজে লেখা হত— “Baby,” “I love you,” এবং “I adore you”-এর মতো আপত্তিকর বাক্য। ছাত্রী জবাব না দেওয়ায় তাঁকে বারবার ট্যাগ করে জিজ্ঞেস করা হতো। এই বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের উচ্চস্তরের কয়েকজনকে জানানো হলেও কোনো লাভ হয়নি। উল্টে ছাত্রীকে শুনতে হয় যে তাঁর নাকি ওইসব মেসেজের জবাব দেওয়া উচিৎ ছিল! এমনকি, এরপরই চ্যাট মুছে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওই ছাত্রীর।
দিল্লির এক অভিজাত প্রতিষ্ঠানের প্রধানের এমন কর্মকাণ্ড ফাঁস হওয়ায় এবং দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অভিযুক্তের গ্রেফতারির ঘটনায় রাজধানীতে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।