“AI-ক্যান্সার সারাবে খুব শিগ্রই”-চমকে দেওয়া ভবিষ্যদ্বাণী করলেন ChatGPT-র প্রধান

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) বা আর্টেফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (Artificial Intelligence) ক্ষমতা এখন সর্বত্র আলোচিত। কিন্তু এই প্রযুক্তি কি এমন কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারবে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি? সেই বিষয়েই এবার এক গুরুত্বপূর্ণ ধারণা দিলেন চ্যাটজিপিটি (ChatGPT)-র নির্মাতা ওপেনএআই (OpenAI)-এর প্রধান স্যাম অল্টম্যান (Sam Altman)।
তিনি বিশ্বাস করেন, এআই যে গতিতে এগিয়ে চলেছে, তাতে এটি খুব শীঘ্রই ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের চিকিৎসা খুঁজে বের করতে সক্ষম হবে।
ক্যান্সার নিরাময়ে ‘১০ গিগাওয়াট’ ম্যাজিক
মঙ্গলবার ‘অ্যাবান্ডান্ট ইন্টেলিজেন্স’ (Abundant Intelligence) শিরোনামের একটি ব্লগ পোস্টে স্যাম অল্টম্যান তার এই আশার কথা জানিয়েছেন। প্রযুক্তি বিলিয়নেয়ার অল্টম্যানের মতে, এআই যদি ১০ গিগাওয়াট (Gigawatt) পরিমাণ কম্পিউটিং শক্তি অর্জন করতে পারে, তবে এটি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাবে, যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব হবে।
অল্টম্যান বলেন, “যদি এআই সেই পথেই এগোয় যেমনটি আমরা ভাবছি, তবে অবিশ্বাস্য অনেক কিছু সম্ভব হয়ে উঠবে। ১০ গিগাওয়াট কম্পিউটিং শক্তি থাকলে এআই ক্যান্সারের চিকিৎসা খুঁজে বের করতে পারবে।”
তিনি আরও জানান, এই পরিমাণ শক্তি দিয়ে এআই পৃথিবীর প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য ব্যক্তিগতভাবে উপযোগী শিক্ষা দেওয়াও সম্ভব করে তুলবে।
বিশাল এআই অবকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা
এই লক্ষ্য পূরণের জন্য স্যাম অল্টম্যানের কোম্পানি এমন এক বিশাল ‘কারখানা’ গড়ার পরিকল্পনা করছে, যা প্রতি সপ্তাহে এক গিগাওয়াট পরিমাণ নতুন এআই অবকাঠামো তৈরি করবে। যদিও ১০ গিগাওয়াট কম্পিউটিং শক্তিতে পৌঁছাতে এখনও কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
অল্টম্যানের এই মন্তব্য এসেছে ওপেনএআই এবং মার্কিন চিপ নির্মাতা এনভিডিয়া (NVIDIA)-র মধ্যে এক ঐতিহাসিক এআই অবকাঠামো চুক্তির ঠিক একদিন পর। এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হল এমন ডেটা সেন্টার তৈরি করা, যা প্রচুর শক্তি ব্যবহার করে উন্নত এআই চালাতে পারবে।
এনভিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং (Jensen Huang) এই প্রকল্পকে “ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এআই অবকাঠামো প্রকল্প” বলে অভিহিত করেছেন। হুয়াং বলেছেন, “এ পার্টনারশিপের মূল উদ্দেশ্য এমন এক এআই অবকাঠামো তৈরি করা, যা কেবল গবেষণাগারেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সাধারণ মানুষের বাস্তব জীবনেও কাজে লাগবে।”
ইতিমধ্যে এআইয়ের বৈজ্ঞানিক ব্যবহার
বর্তমানে, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এআইয়ের ব্যবহার চলছে। যেমন, গুগলের এআই স্টার্টআপ ডিপমাইন্ডের ‘আলফাফোল্ড’ (AlphaFold) নামের একটি এআই টুল টিকা ও ওষুধ আবিষ্কারের গবেষণা দ্রুত করতে সাহায্য করছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, ক্যান্সার কেবল একটি রোগ নয়, এটি শত শত আলাদা রোগের সমষ্টিও। অত্যাধুনিক এআই-এর পক্ষেও এই জটিল রোগকে পুরোপুরি নিরাময় করার জন্য প্রয়োজনীয় জটিল প্রক্রিয়াগুলো বোঝা এখনও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু ওপেনএআই প্রধানের এই ভবিষ্যদ্বাণী বিজ্ঞান জগতে নতুন করে আশার সঞ্চার করল।