প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান দেখাশোনা না করলে সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে, ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের

প্রবীণ নাগরিকদের রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান যদি দেখাশোনা না করে, তাহলে সেই সন্তানকে সম্পত্তি থেকে উৎখাত করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে বাবা-মায়ের।

২০০৭ সালে পাশ হওয়া ‘প্রবীণ নাগরিকদের ভরণপোষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ আইন’-এর আসল উদ্দেশ্য যাতে সাধিত হয়, সেদিকে জোর দিয়েছে আদালত।

ট্রাইবুনালের রায় বহাল রাখল শীর্ষ আদালত
এক ৮০ বছর বয়সি ব্যক্তি এবং তাঁর ৭৮ বছর বয়সি স্ত্রী তাঁদের বড় ছেলেকে সম্পত্তি থেকে উৎখাত করার সিদ্ধান্ত নেন, কারণ তাঁদের বড় ছেলে দেখাশোনা করতেন না। ওই দম্পতির বড় ছেলে মুম্বইয়ে তাঁদের দুটি সম্পত্তির দখল নিয়ে নেন এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে বাবা-মা সেই বাড়িতে এসে থাকতে চাইলে তাঁদের ঢুকতে বাধা দেন।

ট্রাইবুনাল ওই দম্পতির বড় ছেলেকে মাসিক ৩০০০ টাকা করে ভরণপোষণের জন্য দেওয়ার পাশাপাশি সম্পত্তি থেকে উৎখাত করারও নির্দেশ দেয়। যদিও বম্বে হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, ট্রাইবুনালের এই নির্দেশ দেওয়ার অধিকার নেই এবং অভিযুক্ত ছেলেও একজন প্রবীণ নাগরিক বলে উল্লেখ করে এই পদক্ষেপে স্থগিতাদেশ জারি করে।

কিন্তু বম্বে হাইকোর্টের সেই স্থগিতাদেশ খারিজ করে ট্রাইবুনালের রায়ই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট।

আইনের উদ্দেশ্যই ছিল প্রবীণদের সুরক্ষা
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং সন্দীপ মেহতা তাঁদের পর্যবেক্ষণে জানান যে, বৃদ্ধ বাবা-মা এবং প্রবীণ নাগরিকদের উন্নয়ন ও ভরণপোষণ আইন (২০০৭)-এর উদ্দেশ্যই ছিল প্রবীণ নাগরিকদের দুর্দশা লাঘব করা এবং তাঁরা যাতে ভালোভাবে যত্নে বাঁচতে পারেন তা নিশ্চিত করা।

শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই আইনের সংস্থানগুলি এমন ভাবেই কার্যকর করা উচিত যাতে এর আসল উদ্দেশ্য সাধন হয়। কোনও সন্তান বা আত্মীয় যদি প্রবীণ নাগরিকের প্রতি দায়িত্ব পালন না করেন, তবে তাঁকে সম্পত্তি থেকে উৎখাত করার অতীত উদাহরণও রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এও জানায়, সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুনালেরও এই নির্দেশ দেওয়ার অধিকার রয়েছে।

এই ঐতিহাসিক রায়ের ফলে, যেসব প্রবীণ নাগরিক তাঁদের প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের অসহযোগিতা বা দুর্ব্যবহারের শিকার, তাঁদের জন্য আইনি সুরক্ষার পথ আরও সুগম হলো।

Editor001
  • Editor001